মাস পেরিয়ে মোদীকে ছাড়ই দিল কমিশন

১ এপ্রিল ওয়ার্ধার জনসভায় মোদী প্রথম পর্বের ভোটের আগে বালাকোট হামলার কথা মাথায় রেখে দেশের তরুণদের কাছে ভোট চেয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০১:০৯
Share:

ছবি: পিটিআই।

পেরিয়ে গেল চার দফা ভোট। সময় লাগল পাক্কা এক মাস! অবশেষে গত ১ এপ্রিলে মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধার জনসভায় নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধির ভাঙার অভিযোগ খারিজ করল নির্বাচন কমিশন। আজ দিনভর বৈঠক শেষে রাত ৯টা নাগাদ কমিশন জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওয়ার্ধার জনসভার বক্তব্যে (বালাকোটের উল্লেখ করে) কোনও আদর্শ আচরণবিধি ভাঙা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্লিন চিট’ পেলেও প্রচারে কুকথা বলার অভিযোগে আগামী দু’দিন সপা নেতা আজম খানের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন। চলতি নির্বাচনে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার কমিশনের কোপে পড়লেন আজম খান।

Advertisement

১ এপ্রিল ওয়ার্ধার জনসভায় মোদী প্রথম পর্বের ভোটের আগে বালাকোট হামলার কথা মাথায় রেখে দেশের তরুণদের কাছে ভোট চেয়েছিলেন। সেনার নামে প্রধানমন্ত্রী ভোট চেয়েছেন, এই অভিযোগে কমিশনের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। সূত্র জানিয়েছে, জনসভার পরে মহারাষ্ট্র থেকে দিল্লির নির্বাচন কমিশনে যে রিপোর্টটি যায় তাতে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছিল, ওই কথা বলে প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তার পরেই ফের মহারাষ্ট্র নির্বাচন কমিশনের কাছে গোটা বক্তব্যের ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়ে পাঠানো হয়। এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগেই শেষ হয়ে যায় প্রথম চারটি পর্বের নির্বাচন।

গত কাল চতুর্থ দফা নির্বাচনের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে কমিশনের কর্তারা জানান, আজ প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আজ দিনভর বৈঠকের পরে কমিশন সূত্রে জানানো হয়, আজ বৈঠকে সকলেই একমত হয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী ওই বক্তব্য রেখে কোনও আদর্শ আচরণবিধি ভাঙেননি। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্নে কমিশনের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেব। সেই মামলায় কমিশনের কাছে দু’দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্লিন চিট’ দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে কমিশনের নিজের নির্দেশই! চলতি নির্বাচনের প্রচারে সেনাদের যাতে না টানা হয়, তার জন্য একাধিক বার রাজনৈতিক দলগুলিকে সতর্ক করেছিল কমিশন। ভারতীয় সেনাকে ‘মোদীর সেনা’ বলায় কমিশনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েন বিজেপি নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কংগ্রেসের অভিযোগ, অন্য সকলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার সাহস দেখালেও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই গুটিয়ে যায় কমিশন।

গত এক মাসে কমিশনের বিরুদ্ধে একাধিক বার সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী-প্রশ্নে কমিশনের গা-ছাড়া মনোভাবের সমালোচনা করে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি বলেন, এর ফলে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। চলতি নির্বাচনে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেন শিবশঙ্কর মেনন, জহর সরকার, অর্ধেন্দু সেনের মতো প্রাক্তন আমলারাও। তাঁদের মতে, চলতি নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা আদৌ নিরপেক্ষ নয়। তারা শাসক দলের পক্ষ নিয়ে চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন