যোগী আদিত্যনাথ এবং এল রামদাস। ফাইল চিত্র।
ভারতীয় সেনাকে ‘মোদীজি কি সেনা’ বলে উল্লেখ করায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপর চটেছেন দেশের প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশ। বেশ কয়েক জন ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দেগেছেন। এবার ভারতীয় সেনার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার কথা জানালেন প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান এল রামদাস।
গত রবিবারই উত্তরপ্রদেশের একটি জনসভায় ভারতীয় সেনাকে ‘মোদীর সেনা’ বলে বসেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এর পরই ঝড় উঠেছিল সারা দেশের রাজনৈতিক মহলে। কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া ছিল, আদিত্যনাথের এই মন্তব্য আসলে সেনার অপমান। যোগী আদিত্যনাথ এবং বিজেপির কড়া সমালোচনা করে তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, ‘সেনা আসলে সবার’।
রাজনৈতিক সমালোচনার পর এবার আসরে নামলেন দেশের প্রাক্তন সেনাকর্তারাও। বিষয়টি নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানানো হবে বলে জানালেন দেশের প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান এল রামদাস। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভারতীয় সেনা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। তাঁরা গোটা দেশকে সেবা করেন। নির্বাচনের সময় দেশ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতে থাকে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানাব।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান এল রামদাস ছাড়া আরও বেশ কয়েক জন প্রাক্তন সেনাকর্তা প্রকাশ্যেই যোগী আদিত্যনাথের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনান্ট জেনারেল এইচ এস পনাগের হুঁশিয়ারি, ‘‘এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বেশ কিছু দিন ধরেই জাতীয়তাবোধ এবং ভারতীয় সেনাকে এক করে ফেলার একটা চেষ্টা চলছে। এর ফলে ভারতীয় সেনার রাজনীতিকরণের মতো মারাত্মক ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের বুঝতে হবে জাতীয় সেনা একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বিষয়।’’
আরও পড়ুন: ২২ লক্ষ শূন্যপদে চাকরি, গরিবদের অ্যাকাউন্টে বছরে ৭২ হাজার, ইস্তাহার প্রকাশ কংগ্রেসের
নির্বাচনী প্রচারে ভারতীয় সেনাকে ব্যবহার করা যাবে না, নির্বাচন কমিশনের এই কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে থোড়াই কেয়ার করে ভোটের ময়দানে নেমেছে প্রায় সব পক্ষই। যদিও রবিবার গাজিয়াবাদের সভায় সব সীমা ছাড়িয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং মোদী সরকারের প্রচারের অন্যতম মুখ যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেছিলেন,‘‘কংগ্রেসের লোকেরা জঙ্গিদের বিরিয়ানি খাওয়ায়। আর ‘মোদীজি কি সেনা’ বোমা আর গুলি দেয় সন্ত্রাসবাদীদের।’’ এর পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন অনেকে। যদিও এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়নি নির্বাচন কমিশন।