ছবি এপি।
লোকসভা ভোটের মুখে ভুয়ো খবর, মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে ভোটারদের যাতে কেউ বিভ্রান্ত না করতে পারে, সে চেষ্টাই চালাচ্ছে ফেসবুক। এ জন্য ভুয়ো অ্যাকাউন্ট ‘ব্লক’ করা থেকে তথ্য-যাচাই সংস্থার নিয়োগের মতো পদক্ষেপ তারা করছে বলে সংস্থাটি আজ দাবি করেছে।
ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ফর সিভিক ইনটিগ্রিটি ডিভিশনের ডিরেক্টর সমিধ চক্রবর্তী জানান, ভারতের লোকসভা ভোট তাঁদের কাছে চূড়ান্ত গুরুত্ব পাচ্ছে। এ জন্য দু’বছর ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে ভারতে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩০০ মিলিয়ন। সংখ্যাটা এ বারের লোকসভা নির্বাচনে মোট ভোটারের এক-তৃতীয়াংশ।
২০১৬ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ফেসবুক-সহ সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ভুয়ো খবর আটকাতে ব্যর্থ হয় তারা। ভোটে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে। যার জেরে ফেসবুক কর্তা মার্ক জ়াকারবার্গকে মার্কিন সেনেটে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। ভারতেও যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য তৎপর নির্বাচন কমিশন। ভারতের ভোটেও সোশ্যাল মিডিয়ার বিরাট প্রভাব রয়েছে। ভোটের মুখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ফেসবুক, টুইটারে কেউ যাতে ভুয়ো তথ্য ছড়াতে না পারে, তা আটকাতে চাইছে কমিশন। এ জন্য এ বার সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলির জন্য বিশেষ আচরণবিধির কথা কমিশন সামনে এনেছে। আর এই পরিস্থিতিতে তারাও যে তৎপর, আজ সে কথা বুঝিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুক কর্তার মন্তব্য, ‘‘কেউ যাতে ভোটকে প্রভাবিত করতে না পারে, আমরা সেই চেষ্টা করছি। তিনগুণ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’’ সংবাদমাধ্যমে খবর, ভারতে লোকসভা ভোটের আগে ভুয়ো ও আপত্তিকর খবর আটকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুরে একটি টিম গড়েছে ফেসবুক। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে এরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ফেসবুকের এক কর্তা জানান, খবরের সত্যতা যাচাই করতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তাঁরা গাঁটছড়া বেঁধেছেন। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মিলে ইংরাজি, হিন্দি ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় এই কাজ চলছে। ফেসবুকের দাবি, যদি তথ্য যাচাইয়ের পরে যদি কোনও ভুয়ো খবর খুঁজে পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ওই সূত্র থেকে আসা খবরের প্রকাশ ৮০% কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ভারতেও গত কয়েক বছরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর, গুজব ছড়িয়ে হিংসা ছড়ানোর ঘটনা সামনে এসেছে। গত বছর গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় হোয়াটসঅ্যাপ কর্তাদের বারবার তলব করে কেন্দ্র। এর আগে কোনও মেসেজ ২৫৬ জনকে পাঠিয়ে দেওয়া যেত। সংখ্যাটা কমিয়ে ৫-এ নামিয়ে এনেছে হোয়াটসঅ্যাপ।