শ্রদ্ধা: রাজীব গাঁধীর মৃত্যুদিনে। মঙ্গলবার বীরভূমিতে। পিটিআই
আঠাশ বছর আগে আজকের দিনেই জঙ্গি হানায় শ্রীপেরুমবুদুরে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল রাজীব গাঁধীর শরীর। আজ সকালে দিল্লির বীরভূমিতে রাজীবকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও যান। গিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও।
তার কিছু ক্ষণ পরেই এক লাইনের একটি টুইট এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর- ‘‘মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী রাজীব গাঁধীকে শ্রদ্ধার্ঘ্য।’’ অথচ এই মোদীই ক’দিন আগে ভোট প্রচারে আচমকাই টেনে এনেছিলেন রাজীব গাঁধীকে। তাঁকে ‘ভ্রষ্টাচারী নম্বর ওয়ান’ বলেই ক্ষান্ত হননি। বফর্স থেকে শিখ দাঙ্গা, ভোপাল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত অ্যান্ডারসনকে পালাতে দেওয়া থেকে যুদ্ধজাহাজে রাজীবের সপরিবার ছুটি কাটানো- শেষের তিন দফার ভোটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন মোদীর আক্রমণের হাতিয়ার।
রাহুল গাঁধী তখনও দাবি করেছিলেন, বেকারত্ব-দুর্নীতি-কৃষি সঙ্কটের মতো মৌলিক বিষয় থেকে নজর ঘোরাতেই এই চেষ্টা করছেন মোদী। রাহুল জানিয়েছিলেন, রাজীব গাঁধী সম্পর্কে যা বলার বলুন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর হৃদয়ে নরেন্দ্র মোদীর মতো ঘৃণা নেই। ভালবাসা দিয়েই তিনি জয় করবেন মোদীকে। আজ সকালে রাজীবকে শ্রদ্ধা জানানো মোদীর টুইটটিও পছন্দ হয়নি কংগ্রেসের অনেক নেতার। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা দু’জনেই বাবাকে মনে করে টুইট করলেন। নাম না করে মোদীকেই পরোক্ষে খোঁচা দিলেন তাঁরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
টুইটে রাহুল লিখলেন, ‘‘আমার বাবা নম্র, উদার ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন কী করে সকলকে ভালোবাসতে হয়, শ্রদ্ধা করতে হয়। কাউকে কখনও ঘৃণা করতে শেখাননি। বরং ক্ষমা করতে বলেছেন। আমি তাঁর অনুপস্থিতি অনুভব করছি। ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা দিয়েই আমি তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছি।’’ প্রিয়ঙ্কা আবার অমিতাভ বচ্চনের বাবা হরিবংশ রায় বচ্চনের কবিতা লিখে বাবার সঙ্গে নিজের ছোটবেলার একটি ছবি পোস্ট করেন। আর লেখেন, ‘‘তুমি সবসময় আমার কাছে নায়কের আসনেই থাকবে।’’
কংগ্রেস নেতাদের দাবি, রাহুল-প্রিয়ঙ্কা দু’জনেই আজ বুঝিয়ে দিয়েছেন যে গুণ রাজীব গাঁধীর মধ্যে ছিল তার ছিটেফোঁটাও নেই দেশের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর। কোনও দিন তাঁর মধ্যে তা দেখাও যাবে না। থাকলে তিনি ২৮ বছর আগে প্রয়াত এক নেতাকে টেনে এনে তাঁর সম্পর্কে এমন কুৎসা ছড়াতেন না। আর দু’দিন পরেই ভোটের ফল বেরোবে। বুথ ফেরত সমীক্ষা যাই বলুক, প্রকৃত ফলে বিদায় নিশ্চিত হবে নরেন্দ্র মোদীর।