ভোটকর্মী পাঁচ, বুথে ভোটদাতা এক জনই

চিন সীমান্তের কাছেই হায়ুলিয়াং বিধানসভা কেন্দ্র। শিরোনামে উঠে আসা মালোগাম বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার গামার বাম।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:১২
Share:

ভোট দিয়ে সোকেলা তায়াং। ছবি সৌজন্যে, ডিএম ডাগবম রিবা।

‘১০০ শতাংশ’ ভোট পড়ে গিয়েছিল গতকাল সকাল সাড়ে ৯টাতেই। আসলে একজনই তো ভোটার! কিন্তু নিয়ম বড় বালাই। নির্বাচনী নিয়ম মেনেই পাততাড়ি গুটোতে পারেননি প্রিসাইডিং অফিসার গামার বাম। কারণ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ইভিএম বন্ধ করার নিয়ম নেই। অতএব অপেক্ষা।

Advertisement

সড়কই নেই, প্রশ্ন নেই মোবাইল নেটওয়ার্কেরও। তাই অরুণাচলের মালোগাম বুথে এক ও একমাত্র ভোটার সোকেলা তায়াং যে ভোট দিয়েছেন—সেই খবরটুকু জেলা সদরে পৌঁছতেই কেটে গিয়েছে বারো ঘণ্টা। আজ সকালে বুথ গুটিয়ে হাঁটা দেওয়ার কথা ভোটকর্মীদের। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্তও তাঁরা মোবাইলের নেটওয়ার্কের আওতায় এসে পৌঁছননি।

চিন সীমান্তের কাছেই হায়ুলিয়াং বিধানসভা কেন্দ্র। শিরোনামে উঠে আসা মালোগাম বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার গামার বাম। দলে ছিলেন আনজাওয়ের এডিসি সোদে পোতোম, শিক্ষা দফতরের অফিসার রূপক তামাং, এডিসি অফিসের কর্মী সোনুমলাম তিন্ডিয়া ও চিপ্রু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী টিটেনসো ইয়ুন। আগে নেমে আসা পোতোম ফোনে বলেন, ‘‘খাড়া পাহাড়গুলিতে বেশি বাড়ি তৈরি সম্ভব নয়। তাই দুটি বাড়ি থাকলেও সেটিকে গ্রাম বলে ধরা হয়।’’ মালোগামে দুই কন্যাকে নিয়ে বসবাসকারী সোকেলার ভোট সংগ্রহ করতে জেলা সদর হাওয়াই থেকে প্রথমে বাসে ১০০ কিলোমিটার পথ পার করে তাঁরা পৌছন টিডিং। সেখান থেকে শুরু হয় পাহাড় চড়া। কাঁধে কাঁধে নিয়ে যাওয়া হয় বেঞ্চ, টিনের পাত, খাবার, জল ও অন্য সামগ্রী।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভোটের আগেও একবার ভোটকর্মীদের মালোগাম যেতে হয়েছিল। আনজাওয়ের জেলাশাসক ডোগবাম রিবা জানান, ওই মহিলা এখনও মালোগামে আছেন কিনা, তা দেখা এবং তাঁকে ভোটের দিনক্ষণ জানানো প্রশাসনেরই দায়িত্ব। তাই সোকেলাকে খুঁজে বের করতে দু’বার নির্বাচন কমিশনের দূত পাঠাতে হয় ওই পাহাড়ের মাথায়।

অরুণাচলেরই চাংলাং জেলার বিজয়নগরে, মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা গাঁধীগ্রাম বুথে ভোট করাতে যাওয়া প্রিসাইডিং অফিসার কানোত পারমে ও ভোটকর্মীদের আগে আট দিন হাঁটতে হত। কিন্তু বায়ুসেনা ৩২ জন ভোটকর্মীকে বিজয়নগরে নামানোর জন্য কপ্টারের ব্যবস্থা করে। অরুণাচলের এমন বিভিন্ন পাহাড়ি, প্রত্যন্ত বুথে পৌঁছতে জঙ্গলে-পাহাড়ে রাত কাটাতে হয় ভোটকর্মীদের।

জেলাশাসকদের বক্তব্য, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজে হপ্তাভর হেঁটে পারাপার করা অরুণাচলের পাহাড়ি জেলার বহু সরকারি কর্মীর অভ্যাস। চাংলাংয়ের

জেলাশাসক আর কে শর্মা জানান, সে কারণেই ভোটের কাজের জন্য চল্লিশের কমবয়সী, লম্বা হাঁটায় অভ্যস্ত কর্মীদেরই বেছে নেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement