আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পরস্পরের দিকে আঙুল তুললেন মোদী-মমতা।
এক দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন সিন্ডিকেট, তোলাবাজি নিয়ে বিঁধলেন ‘দিদি’কে, ‘মোদীবাবু’কে তখন নোটবন্দি আর কালো টাকা নিয়ে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার শ্রীরামপুরের সভায় সরাসরি মোদীকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘আগে বলেছিলেন কালো ধন ফেরত আনবেন। সেই টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা করে সবার পকেটে দেবেন। তা তো হয়ইনি, উপরন্তু নোট বাতিল করে সকলের পকেট কেটেছেন। নোট বাতিল করেও কালো টাকা উদ্ধার হয়নি। কারণ, কালো টাকা সব বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন তাতেই ভোটের প্রচার করছে বিজেপি।’’
বীরভূমের সভায় মোদী অবশ্য দাবি করেছেন, বিদেশে কালো টাকা জমানোর দিন শেষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সারা দুনিয়ার কোথাও এখন আর কালো টাকা কেউ লুকিয়ে রাখতে পারবে না। সব দেশ ঘুরে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। বিদেশের ব্যাঙ্কে কোনও ভারতীয় টাকা রাখলেই রিয়েল টাইমে আমাদের কাছে খবর চলে আসবে।’’
শ্রীরামপুরের সভায় এ দিন মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, আরএসএস-এর প্রচারকদের হাত দিয়ে রাজ্যে কালো টাকা পাঠাচ্ছে বিজেপি। দলীয় কর্মীদের সতর্ক করে তাঁর নির্দেশ, ‘‘বাইরে থেকে সব প্রচারক পাঠিয়েছে। ওদের উপর নজর রাখবেন। হাতে টাকার ব্যাগ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’ এর পরেই কৃষ্ণনগরের সভায় মমতা অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি বাক্স বাক্স টাকা নিয়ে আসছে। সেই টাকা নিয়ে ভোটারদের বলছে এক হাজার দেব, দু’হাজার দেব, পাঁচ হাজার দেব— আমাদের ভোট দাও। বলছে বাইক দেব। যদিও পরে সেই বাইক কেড়ে নেবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রধানমন্ত্রী এ দিন সভা করেছেন ইলামবাজার এবং রানাঘাটে। দু’জায়গাতেই সিন্ডিকেট, তোলাবাজির প্রসঙ্গ তুলে মমতাকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রের পাঠানো বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাতেও ভাগ বসায় তৃণমূলের তোলাবাজেরা। একই সঙ্গে সারদা এবং নারদ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে দোষীদের শাস্তি হবে বলে ঘোষণা করেন মোদী।
মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা জবাব, ‘‘আমার সরকার কারও কাছ থেকে এক টাকাও নেয় না। টাকা চুরি করে পার্টি চলে না। আমার প্রয়োজন নেই। যতটুকু ক্ষমতা, ততটুকু কাজ।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেস, ইনকাম ট্যাক্স, এডুকেশন ট্যাক্সের টাকা নিয়ে যায় কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও আমাদের রাজ্যের বৃদ্ধির হার তিনগুণ। তাই টাকাও বেশি। ওরা সভায় রাজ্যকে টাকা দিয়েছি বলে দাবি করে। যেন বাবাজির টাকা। মনে রাখবেন এটা জনগণের টাকা।’’