মুকেশ অম্বানী ও অনিল অম্বানী। —ফাইল চিত্র।
রাফাল নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগে একদিকে যখন জেরবার অনিল অম্বানী, সেইসময়ই কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করতে দেখা গেল তাঁর দাদা মুকেশ অম্বানীকে। এ বছর দক্ষিণ মুম্বই থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছেন মুম্বই কংগ্রেসের সভাপতি তথা প্রাক্তন লোকসভা সাংসদ মিলিন্দ দেওরা। একটি ভিডিয়োয় তাঁকে দরাজ সার্টিফিকেট দিতে দেখা গিয়েছে রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানীকে।
গতকাল নিজের টুইটার হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন মিলিন্দ দেওরা। তাতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তাবড় শিল্পপতিদেরকেও তাঁকে সমর্থন করতে দেখা যায়। দেখা মেলে মুকেশ অম্বানীরও। মিলিন্দ দেওরাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে তিনি বলেন, দক্ষিণ মুম্বইয়ের জন্য মিলিন্দ দেওরাই সবচেয়ে যোগ্য। দীর্ঘ ১০ বছর দক্ষিণ মুম্বই থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এখানকার সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বাস্তু ওঁর নখদর্পণে।
মায়ানগরীকে শিল্পনগরী হিসাবে গড়ে তোলাই তাঁর লক্ষ্য বলে টুইটারে দাবি করেন মিলিন্দ দেওরা। তাই ছোট দোকানদার থেকে তাবড় শিল্পপতিদের নিয়ে তৈরি ওই ভিডিয়োটি পোস্ট করেন তিনি। কোটাক মহিন্দ্রা গ্রুপের উদয় কোটাকও তাতে মুখ দেখিয়েছেন। কিন্তু মুকেশ অম্বানীর উপস্থিতিই সকলের নজর কেড়েছে। কারণ ২০০৫ সালে ব্যবসা আলাদা হয়ে যাওয়ার পর দুই ভাইয়ের মধ্যে দূরত্ব বাড়লেও, সম্প্রতি ভাঙা সম্পর্ক আবার জোড়া লাগতে শুরু করেছিল। মুকেশের মেয়ে ইশা ও ছেলে আকাশ অম্বানীর বিয়েতে আতিথেয়তা করতে দেখা গিয়েছিল অনিল অম্বানীকে। আবার এরিকসন গ্রুপের বকেয়া ৫৫০ কোটি টাকা মেটাতে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন দাদা মুকেশ ও তাঁর স্ত্রী নীতা অম্বানী।
এই ভিডিয়োই পোস্ট করেন মিলিন্দ দেওরা।
আরও পড়ুন: কোন নিয়মে বরখাস্ত ওড়িশার আইএএস অফিসার? মোদীর কপ্টারে তল্লাশি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
আরও পড়ুন: ফিরদৌসের পরে গাজি নুর, বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
তবে রাফাল বিতর্ক থেকে বরাবরই দূরত্ব বজায় রেখে এসেছেন মুকেশ ও তাঁর পরিবার। ইউপিএ আমলে রাফাল চুক্তি নিয়ে ফরাসি সংস্থা দাসোঁর সঙ্গে দরাদরির সময় মুকেশ অম্বানীর সংস্থা তার অফসেট বরাত পেতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়িক কারণে পরে সরে আসে তারা। ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদী সরকার দাসোঁর সঙ্গে ৩৬টি বিমান কেনার চুক্তি করলে তার অফসেট বরাত পায় অনিল অম্বানীর সংস্থা। যুদ্ধবিমান তৈরিতে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও, বেশি দাম দিয়ে বিমান কিনে মোদী সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দেয় বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। অনিল অম্বানীর পকেট ভারী করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-ই অনিল অম্বানীকে জনগণের টাকা চুরি করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। নির্বাচনী প্রচারেও একই দাবি করে যাচ্ছেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে সেই কংগ্রেসের নেতার হয়ে মুকেশ অম্বানীর ভোট চাওয়ায় কপালে ভাঁজ অনেকেরই। তবে এরকম একটা কিছু হতে পারে আন্দাজ করেই মুকেশ অম্বানী নিয়ে ভিডিয়োটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান মিলিন্দ দেওরা। তাঁর দাবি, উদয় কোটাকের চেয়ে মুকেশ অম্বানীকে দেখে মানুষ উত্সাহিত হবেন জানতেন। ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।