চাপে পড়ে মোদীর মুখে আখ, পেঁয়াজ আর হ্যালের কথা

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ছিল পিম্পলগাঁও ও নন্দুরবার এলাকায়। এখানকার পেঁয়াজ চাষিদের কান্না অনেক দিনের। চাষের যা খরচ, তাতে লাভের আশা তো দূর, ফসল বিক্রি করতে বাজারে আনার টাকাই উঠছে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৩৯
Share:

ছবি: পিটিআই।

শুধু সন্ত্রাস মোকাবিলার কথা বললেই চিঁড়ে ভিজবে না। মঞ্চের ও পাশে বসে অনেক মুখ হাজারো প্রশ্ন নিয়ে। সে কথা বুঝেই সোমবার মহারাষ্ট্রের ভোটপ্রচারে পেঁয়াজ আর আখ চাষিদের দুর্দশা নিয়েও বলতে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। টেনে আনতে হল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালের প্রসঙ্গও। তবে এই সব ব্যাপারেই সঙ্কটের দায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কংগ্রেস ও এনসিপির উপরেই চাপিয়ে দিলেন তিনি।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের নাশিক, ডিন্ডোরী, ধুলে কেন্দ্রগুলির বিজেপি-শিবসেনা প্রার্থীদের জন্য আজ ভোটপ্রচারে গিয়েছিলেন মোদী। নাশিকে রয়েছে হ্যালের একটি কারখানা। রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, রাফালের বরাত হ্যালকে দেননি মোদী, দিয়েছেন অনিল অম্বানীকে। জবাবে আজ মোদীর পাল্টা দাবি, হ্যালকে ধ্বংস করেছে বিরোধীরাই। বরং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়িয়েছে তাঁর সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ছিল পিম্পলগাঁও ও নন্দুরবার এলাকায়। এখানকার পেঁয়াজ চাষিদের কান্না অনেক দিনের। চাষের যা খরচ, তাতে লাভের আশা তো দূর, ফসল বিক্রি করতে বাজারে আনার টাকাই উঠছে না। কখনও কখনও পেঁয়াজ চাষিরা প্রতিবাদ জানাতে স্বল্প লাভের অঙ্ক প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়ে বিষয়টিকে গোটা দেশের সামনে এনে দিয়েছেন। এই চাপের মধ্যেই মোদী আজ এখানে দাবি করেন, পেঁয়াজ মজুত করার ব্যবস্থা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে তাঁর সরকার। ফসল পরিবহণের খরচ যাতে কমে, সেই চেষ্টাও হচ্ছে। পাঁচ বছর সরকার চালানোর পরে এ দিন তাঁর দাবি, কংগ্রেসই ফসলের দাম পেতে দেয়নি চাষিদের। দালালদের জন্য কাজ করে গিয়েছে তারা। মোদীর মন্তব্য, ‘‘দালালদের বিরুদ্ধে আমিই লড়ছি। আমাদের সরকার দালালরাজ শেষ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।’’ আর আখ চাষিদের প্রতি তাঁর আশ্বাস, তাদের সমস্যা মেটাতে ইথানল উৎপাদনের কথা ভাবা হবে। মোদীর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেস আর এনসিপির জন্যই এত দিন এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো যায়নি। তেল আমদানি হলে এঁদের নেতারা ঘুষ পেতেন। ইথানল হলে ওঁদের টাকা কমে যাবে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সংরক্ষণ নিয়েও বিরোধীরা অপপ্রচার করছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় এলে সংরক্ষণের সমস্যা হবে বলে বিরোধীরা প্রচার করছেন। কিন্তু মোদী যত ক্ষণ রয়েছে, কেউ বাবাসাহেব অম্বেডকরের দেওয়া সংরক্ষণ তুলে দিতে পারবে না।’’ অরণ্যবাসীদের উদ্দেশে মোদীর আশ্বাস, যে জমিতে তাঁরা চাষ করছেন, তাতে কেউ হাত দিতে পারবে না।’’ অনেকেই মনে করছেন, কেন্দ্রের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রেও বিজেপি সরকারে রয়েছে। ফলে এই সঙ্কটের দায় তাদের উপর আসছে। এ নিয়ে এতটাই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে যে মুখ খুলতে হয়েছে মোদীকে।

রুটি-রুজির এই সমস্যা নিয়ে নিজের মতো করে জবাব দেওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার কথাও ছিল মোদীর মুখে। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস জমানার মতো নয়, জঙ্গিদের জোরালো জবাব দিয়েছে তাঁর সরকার। মোদীর মন্তব্য, ‘‘২০১৪-র আগে দেশের নানা প্রান্তে— মুম্বই, পুণে, বারাণসী, অযোধ্যা কিংবা জম্মুতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে যেত। কংগ্রেস-এনসিপির সরকার শোকসভা করত। দুনিয়ার সামনে কেঁদে বলত, পাকিস্তান এ সব ঘটিয়েছে। আর চৌকিদার কী করছে? সেই নরম মনোভাব
পুরো বদলে দিয়েছে।’’ এ দিন রাজস্থানের উদয়পুরেও সন্ত্রাস মোকাবিলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জঙ্গিদের ঘরে গিয়ে আঘাত করছে মোদী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন