নীতীশের ভিন্ন সুর ভোট শেষের দিনে  

ভোট দিয়ে বেরিয়েই বেশ কিছু বিষয়ে বিজেপি থেকে কিছুটা ভিন্ন সুরে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন নীতীশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

ভোটদান। রবিবার পটনায় নীতীশ কুমার। পিটিআই

শেষ পর্যায়ের ভোটের মধ্যেই বিজেপির থেকে নিজেকে কিছুটা হলেও আলাদা করলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আজ পটনা রাজভবন স্কুলের ৩২৬ নম্বর বুথে ছেলে নিশান্ত কুমারের সঙ্গে ভোট দিতে যান তিনি। এই প্রথম পটনায় ভোট দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

ভোট দিয়ে বেরিয়েই বেশ কিছু বিষয়ে বিজেপি থেকে কিছুটা ভিন্ন সুরে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন নীতীশ। নাথুরাম গডসে প্রসঙ্গে ভোপালে বিজেপির প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞার ভুমিকা ‘নিন্দনীয়’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। জেডিইউ তার দীর্ঘদিনের জম্মু-কাশ্মীর নীতি থেকে পিছু হটছে না বলেও জানান তিনি। অযোধ্যা নিয়েও বিজেপির লাইনের বাইরে কথা বলেন জেডিইউ নেতা। তবে এনডিএ জোটই ফের সরকার গড়বে বলেও জানান নীতীশ। সংসদ ত্রিশঙ্কু হলে কংগ্রেস-জেডিইউ জোটের সম্ভাবনা নিয়ে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ সম্প্রতি যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, নীতীশ তা এক কথায় উড়িয়ে দেন। তাঁর কথায়, ‘‘গুলাম নবির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভাল। তবে ওঁর দলেই ওঁর কথার কোনও ওজন নেই।’’

মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে সাধ্বী প্রজ্ঞা ‘দেশভক্ত’ বলেছিলেন। পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি (সাধ্বীকে) ক্ষমা করতে পারবেন না। বিজেপি শো-কজও করেছে সাধ্বীকে। দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নীতীশ এ দিন বলেন, ‘‘সাধ্বী প্রজ্ঞার এই ধরনের মন্তব্য নিন্দনীয়। তাঁর দল কী ব্যবস্থা নেবে সেটা তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা এ ধরনের মন্তব্য বরদাস্ত করব না।’’

Advertisement

তবে নীতীশকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি আরজেডি নেত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ীদেবী। তিনি বলেন, ‘‘প্রজ্ঞা ঠাকুরকে নিয়ে সমস্যা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে তখনই বেরিয়ে আসতে পারতেন। এখন ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। এ সব বলে কী লাভ!’’

জম্মু-কাশ্মীর নিয়েও বিজেপির উল্টো সুরে গেয়েছেন নীতীশ। তাঁর কথায়, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা তুলে দেওয়া জাতীয় ঐক্য ও সংহতির পক্ষে ক্ষতিকারক।’’ নীতীশ গোড়া থেকেই এই দুই ধারা তুলে দেওয়ার বিপক্ষে। তবু ভোট শেষের মুখে ফের বিষয়টি উস্কে দেওয়াটাকে অর্থবহ মনে করছেন রাজনীতির লোকজন। অযোধ্যায় রাম মন্দির নিয়েও এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আদালতের মাধ্যমেই বিতর্কের সমাধান হওয়া উচিত।’’

এ বার উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে ভোট হল সাত দফায়। এতগুলি দফায় ভোট হওয়ার বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রচণ্ড গরমে এত দফায় ভোট নেওয়া উচিত নয়। ভোট কেন্দ্রে কোনও শেডের ব্যবস্থা থাকে না। ফলে রোদে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হয়। এটা খুবই কষ্টকর। তাই অক্টোবর-নভেম্বর বা ফেব্রুয়ারি-মার্চে দুই থেকে তিন দফায় ভোট হওয়া উচিত।’’ বিষয়টি নিয়ে দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী ও দলের নেতাদের চিঠি লিখবেন বলেও জানিয়েছেন নীতীশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন