প্রচারে কংগ্রেস প্রার্থী এমজিভিকে ভানু। নিজস্ব চিত্র
রাজনীতি নিয়ে যত না আলোচনা, তার চেয়ে বেশি চর্চা কংগ্রেস প্রার্থীর নাম নিয়ে। তেজপুরের লোকসভা কেন্দ্রে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস, রাজ্যের প্রাক্তন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এমজিভিকে ভানু কংগ্রেসের হয়ে বিজেপির মন্ত্রী পল্লবলোচন দাসের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে লড়ছেন। নেপালি প্রধান তেজপুর কেন্দ্রে সচরাচর নেপালি প্রার্থী দেয় দলগুলি। কিন্তু এবারে জোর দেওয়া হয়েছে চা জনজাতির ভোটে।
পল্লব নিজে চা জনজাতির প্রতিনিধি ও চা শ্রমিক ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন নেতা। ভানু শোণিতপুরের প্রাক্তন জেলাশাসক ছিলেন। ছিলেন টি বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যানও। তেজপুরে তাঁর ছোট বাগান ও ঘর আছে। তাই আদতে অন্ধ্রের মানুষ হলেও ভানু নিজেকে স্থানীয় মানুষ ও চা শ্রমিকদের প্রতিনিধি বলেই দাবি করছেন।
কিন্তু মানুষের অসীম আগ্রহ, এমজিভিকে-র পুরো কথাগুলি কী! ভানু নিজে পুরো নাম প্রকাশ করতে চাইছেন না। এখনও পর্যন্ত এমজিভিকের পুরো নাম জানতে চেয়ে কয়েক লক্ষ বার সার্চ করা হয়েছে গুগলে। নামরহস্যকে ভোট প্রচারের কাজে লাগানো ভানু পোস্টার তৈরি করিয়েছেন। সেখানে লেখা, এম- মানে মানবসেবী, জি হল গুণী, ভি শব্দের অর্থ ভরসাযোগ্য আর কে অর্থ কর্তব্যপরায়ণ। নাম জানতে চাইলে শেক্সপিয়রের ‘রোমিয়ো অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর লেখার ঢঙে বলছেন, “নামে কী বা আসে যায়। কাজেই আমার পরিচয়।” ভানুর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম গোদাবরী জেলার নববুপালেমের বাসিন্দা ভানুর পুরো নাম, মাথুগুরু গোপালা ভেঙ্কট কুমারা ভানু।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে পল্লবের দাবি, যে মানুষের নামই কেউ জানতে পারছে না, তিনি কী ভাবে স্থানীয় মানুষের কাছের লোক হয়ে উঠবেন? এমনকি, এ-ও বলেছেন, “হাল টানার কাজ আমার মতো যুবক যেমন পারবে, বুড়ো গরু দিয়ে সেই কাজ হবে না।” ভানুকে ‘ফরম্যালিনে ডোবান চালানি মাছ’ বলেও ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এহেন রুচিবিরুদ্ধ আক্রমণে ক্ষুণ্ণ ভানু বলেছেন, “এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ মোটেই অসমের সংস্কৃতি ছিল না। পল্লব কমবয়সি ছেলে। দুঃখ পেলেও ওকে ক্ষমা করে দিলাম।’’
এই তেজপুরেই লড়ার কথা ছিল রাজ্যের অর্থমন্ত্রী তথা নেডা চেয়ারম্যান হিমন্তবিশ্ব শর্মার। ভানুর অবশ্য দাবি, হিমন্ত কেন, খোদ নরেন্দ্র মোদী এলেও তেজপুরে জিততে পারতেন না। আর পল্লবের পাল্টা, “ভোটের পরে ভানুকে রাজনীতি থেকেও অবসর নিতে হবে।”