ইভিএম-এ স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্টও

উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি একতরফা জেতার পরেই ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগে সরব হন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিরোধীরা তো বটেই, এ বার ইভিএম প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে নির্বাচন কমিশনও। ফলাফলে স্বচ্ছতা আনতে কমিশন ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট যন্ত্রের তুলনা করে থাকে। কারচুপি নিয়ে এত প্রশ্ন ওঠা সত্ত্বেও কমিশন কেন দুই মেশিনের ফলাফলের তুলনার সংখ্যা বাড়ায়নি, তা আগামী সপ্তাহের শুনানিতে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি একতরফা জেতার পরেই ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগে সরব হন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। একে একে দলিত নেত্রীর ধাঁচেই ইভিএম-এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে অন্য বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। যদিও শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন দাবি করে আসছে, ইভিএম-এ কারচুপি অসম্ভব। দাবি প্রমাণে প্রতিটি বুথে ‘ভোটার ভেরিয়বেল পেপার অডিট ট্রেল’ (ভিভিপ্যাট) যন্ত্র ব্যবহার করা শুরু করছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, কোনও ভোটার ইভিএমে কাকে ভোট দিচ্ছেন তা ৭ সেকেন্ডের জন্য ইভিএমের সঙ্গে লাগানো ওই ভিভিপ্যাট যন্ত্রে ফুট ওঠে। তা দেখে নিজের ভোট কোথায় পড়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন কোনও ভোটার। একই সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিটি বিধানসভার যে কোনও একটি ভোটকেন্দ্র ও লোকসভার ক্ষেত্রে সেই কেন্দ্রের অন্তর্গত প্রতিটি বিধানসভায় একটি করে বুথের ইভিএম ও ভিভিপ্যাট যন্ত্রের ফলাফল তুলনা করে দেখে থাকে কমিশন।

বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে দাবিজানায়, স্বচ্ছতার প্রশ্নে অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ কেন্দ্রের ইভিএম ও ভিভিপ্যাট-এর ফল তুলনা করে দেখুক কমিশন। আজ সেই মামলার শুনানিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে প্রায় ৯০ কোটি ভোটার। তার অর্ধেক তো দূরে থাক, ৩০ শতাংশ ভোটারের ফলাফল তুলনা করে দেখাটাই বিরাট সময় সাপেক্ষ বিষয়। এতে প্রচুর লোকেরও প্রয়োজন হবে। সেই যুক্তি মানতে চাননি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তিনি আজ বলেন, আদালত চায় ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের মধ্যে ফলাফলের তুলনা আরও বাড়ানো হোক। বর্তমানে কেবল একটি কেন্দ্রে তুলনা হয়ে থাকে। তারা নিজেরাই সেই সংখ্যা বাড়াতে পারে কি না, তা আজ কমিশনের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান গগৈ।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কমিশনের পক্ষে উপ-মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুদীপ্ত জৈন আদালতকে জানান, একাধিক কারণে কমিশন মনে করে বর্তমানে চালু পদ্ধতিই সঠিক ভাবে কাজ করছে। কমিশনের প্রতিনিধির ওই জবাব শুনে ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান— কোনও প্রতিষ্ঠান, এমনকি বিচার ব্যবস্থাও পরামর্শ গ্রহণ বন্ধ করতে পারে না। এর পরেই কমিশনের সমালোচনা করে গগৈ বলেন, যদি কমিশন এতোই নিশ্চিত হয়, তা হলে তারা কেন নিজে থেকেই ভিভিপ্যাট যন্ত্র ব্যবহার করা শুরু করেনি। কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অপেক্ষায় বসে ছিল। আগামী ১ এপ্রিল ওই মামলার শুনানি। কেন্দ্রওয়াড়ি কেন আরও বেশি করে ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের তুলনা করা সম্ভব হচ্ছে না, আগামী শুনানির দিনে কমিশনের কাছে তার জবাব চেয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন