সন্ত্রাস নয়, রোজগারই মূল ভাবনা ভোটারদের  

নরেন্দ্র মোদী বছরে বছরে নতুন এক কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি সংস্থা এনএসএসও-র সমীক্ষাই বলেছে, নোট বাতিলের পরে বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৬
Share:

চার মূর্তি, কৃষ্ণনগর।

পুলওয়ামায় জঙ্গি-হামলার জবাবে বালাকোটে জইশ-শিবিরে বায়ুসেনা অভিযান চালানোর পর থেকেই সেনার জয়গান গেয়ে চলেছে বিজেপি। বি এস ইয়েদুরাপ্পার মতো দু’এক জন নেতা মুখ ফসকে বলেও ফেলেছেন, বালাকোট অভিযান বিজেপিকে ভোটে ফায়দা দেবে। কিন্তু একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ভোটারদের অগ্রাধিকারের তালিকায় সন্ত্রাসবাদ বা মজবুত সামরিক বাহিনী রয়েছে একেবারে পিছনের সারিতে। অগ্রাধিকারের তালিকায় একেবারে প্রথমে রয়েছে রোজগারের সুযোগ। যে রোজগারের সুযোগ নিয়ে মোদী সরকার বড়সড় প্রশ্নের মুখে রয়েছে। সমীক্ষাটি করেছে অসরকারি সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)’।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদী বছরে বছরে নতুন এক কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি সংস্থা এনএসএসও-র সমীক্ষাই বলেছে, নোট বাতিলের পরে বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে। ফাঁস হয়ে যাওয়া সেই সমীক্ষা রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার এখনও প্রকাশ করেনি। এডিআর তাদের যে সমীক্ষার ফল আজ জানিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ভোটাররা দশটি বিষয়কে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখছেন। সেগুলি হচ্ছে: রোজগারের সুযোগ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পানীয় জল, সড়ক, গণ পরিবহণ, সেচের জল, পর্যাপ্ত কৃষি ঋণ, ফসলের উচিত দাম, সার-বীজে ভর্তুকি ও আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা। মানুষ এ-ও জানিয়েছেন, তারা এই সব ক’টি ক্ষেত্রেই সরকারের কাজে সন্তুষ্ট নন।

পুলওয়ামায় জওয়ানদের উপরে হামলার জবাবে পাকিস্তানের মাটিতে জইশ-শিবিরে অভিযান চালানোর পর থেকেই নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা এ নিয়ে জনসভায় বড়াই করছেন। বিজেপি নেতারা মুখে বলছেন, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার কৃতিত্বও মোদীকে দিতে চাইছেন তাঁরা।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এডিআর-এর দাবি, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রে ২ লক্ষ ৭৩ হাজারের বেশি ভোটারের উপরে তারা সমীক্ষায় চালিয়েছেন। সেই সমীক্ষা বলছে, তাদের সমীক্ষায় মাত্র ৩.৬০ শতাংশ মানুষ সন্ত্রাসবাদকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। মজবুত সামরিক বাহিনীকে অগ্রাধিকার দেন মাত্র ৩.৭৮ শতাংশ মানুষ। সেই তুলনায় ৪৬.৮০ শতাংশ মানুষ ভাল রোজগারের সুযোগকে অগ্রাধিকার দেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পানীয় জল।

এই সমীক্ষা বলছে, ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ সব থেকে বেশি গুরুত্ব পায়। তার পরে প্রাধান্য পায় প্রার্থী কোন দলের এবং প্রার্থীর নিজস্ব পরিচিতি। সমীক্ষা অনুযায়ী, ৭৫ শতাংশের বেশি ভোটারের কাছে মুখ্যমন্ত্রী কে, সেটিই বেশি প্রাধান্য পায়। কিন্তু সমীক্ষায় যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের ৪১ শতাংশের বেশি মনে করেন, ভোটারের কাছে নগদ টাকা, উপহার বা মদের বোতলও ভোটের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা নেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন