ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দল বদল নিয়ে চর্চা আরও জোরালো হল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের দলে টানার চেষ্টা করায় বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার তাঁর দলের প্রার্থী তালিকায় অন্য দল থেকে আসা মুখ দেখিয়ে বাকি বিরোধীরাও পাল্টা সরব হল।
কালীঘাটে মঙ্গলবার মমতা যখন দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করছেন, দিল্লিতে তখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ অনুপম হাজরা। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া দুলাল বরও নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। এই প্রেক্ষিতেই মমতার মন্তব্য, ‘‘ধার চেয়ে লজ্জা দেবেন না! এ বার তো একটা সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। ওরা তো চুপিচুপি আমাকে বলতে পারত, গদ্দারগুলোকে দাও। একটা গদ্দারকে নিয়ে হয়নি! বললেই পারত, আরও গদ্দার পাঠিয়ে দিতাম!’’
তৃণমূলে ব্রাত্য সৌমিত্র খাঁ বা অনুপম যেমন বিজেপিতে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন, তেমনই আবার গুঞ্জন আছে আরও কিছু নেতাকে নিয়ে। ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ চেয়েছিলেন ব্যারাকপুরে প্রার্থী হতে। কিন্তু সেখানে দীনেশ ত্রিবেদীই টিকিট পেয়েছেন। তৃণমূল নেত্রী নিজে অর্জুনের সঙ্গে কথা বলে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করলেও প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে অর্জুন বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যা হল, মনটা ভেঙে গিয়েছে। আমার অবস্থা পুরনো ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো। দুলতে দুলতে এক বার এ দিকে যাচ্ছি, এক বার ও দিকে যাচ্ছি! ঘড়ি থেমে গেলে দোলাও বন্ধ হয়ে যাবে।’’ অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘যোগাযোগ অনেকের সঙ্গেই হয়। তবে আমি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন নিয়ে এই তথ্যগুলি জানতেন?
কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে এ বার প্রার্থী করেননি মমতা। তিনি বলেন, ‘‘পার্থকে আমরা অন্য কাজে লাগাব, যদি ও দলে থাকে।’’ পার্থ অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি দলের সঙ্গেই থাকবেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
খাতায়-কলমে কংগ্রেসের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগরওয়াল, অপূর্ব সরকার এবং আবু তাহেরকে লোকসভায় তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন দিতে গেলে বিধায়ক-পদে ইস্তফা দিতে হবে। একই কাজ করতে হবে দার্জিলিঙের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়ক অমর সিংহ রাইকেও। তৃণমূলের এই তালিকা দেখেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের মন্তব্য, ‘‘এ দল, ও দল থেকে লোক ভাঙিয়ে ওঁরা প্রার্থী করেছেন!’’ সোমেনবাবু নিজেও অবশ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে ১০ বছর আগে সাংসদ হয়েছিলেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মতে, ‘‘প্রার্থী তালিকা দেখে মনে হচ্ছে, গোটাদশেক আসনে তৃণমূল বিজেপিকে ওয়াক ওভার দিতে চাইছে!’’