সেবি-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচ। ছবি: সংগৃহীত।
শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে ক্লিনচিট দিল লোকপাল। তাঁর বিরুদ্ধে আমেরিকার শেয়ার বাজার বিশ্লেষক তথা কর্পোরেট তথ্যানুসন্ধান সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের তোলা অভিযোগের কোনও আইনগত ভিত্তি নেই বলে বুধবার জানিয়েছে লোকপাল।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র পর্ষদে সদস্য ও চেয়ারপার্সন হওয়ার পরেও নিজের উপদেষ্টা সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রিতে মাধবী অংশীদারি বহাল রেখেছিলেন। রিপোর্টে দাবি, ওই ভারতীয় উপদেষ্টা সংস্থাটি বিভিন্ন দেশীয় শিল্পকে পরামর্শ দিয়ে আয় করে। অংশীদার হিসেবে সেই আয়ের শরিক হয়েছিলেন মাধবী এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে দাবি করা হয়, যে বিদেশি ও অখ্যাত লগ্নিকারী সংস্থার মাধ্যমে আদানি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত সংস্থাগুলিতে পুঁজি ঢেলে তাদের শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়ানো হয়েছিল, তাতে বুচ দম্পতির লগ্নি ছিল।
বস্তুত, মাধবী এবং তাঁর স্বামী স্কীকারও করে নিয়েছিলেন গৌতম আদানির সংস্থায় লগ্নির কথা। কিন্তু লোকপাল জানিয়েছে, উপস্থাপিত প্রমাণ এবং নথি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়ানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। হিন্ডেনবার্গের দাবি ছিল, বুচ দম্পতির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে বারমুডা এবং মরিশাসে ‘অস্বচ্ছ তহবিলে’ লগ্নি ছিল তাঁদের। সেখানে রাখা ছিল বিনোদ আদানির সরানো টাকাও। সে সময় মাধবী জানিয়েছিলেন, ওই তহবিল পরিচালনা করতেন তাঁর স্বামীর বাল্যবন্ধু, যিনি আদানিদের ডিরেক্টর ছিলেন।
এর পরেই হিন্ডেনবার্গ অভিযোগ তোলে— আদানিদের সঙ্গে জড়িত তহবিলের তদন্তের দায়িত্ব ছিল সেবি-র উপরে। সেবি-র কর্ণধার মাধবী। আর ওই তহবিলের মধ্যে ছিল বুচ দম্পতির ‘ব্যক্তিগত লগ্নি’। এ ক্ষেত্রে বিষয়টি স্বার্থের সংঘাতকেই তুলে ধরে। মাধবীকে তাঁর ভারতীয় পরামর্শদাতা সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রি ও সিঙ্গাপুরের সংস্থা আগোরা পার্টনার্স সিঙ্গাপুরে অংশীদারি স্পষ্ট করতে বলেছিল হিন্ডেনবার্গ। জানিয়েছিল, ২০১৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সেবি-র পূর্ণ সদস্য থাকার সময়েও সিঙ্গাপুরের সংস্থার ১০০ শতাংশ মালিকানা ছিল মাধবীর হাতে। এমনকি মাধবী যখন সেবি কর্ণধার হন, তার পরে ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩- ২৪ সালে সংস্থাটির আয় প্রায় ২.৪ কোটি টাকা ছিল বলে অভিযোগ তোলে মার্কিন সংস্থাটি। তবে সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী সংস্থার তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি তদন্তকারী সংস্থার।