হাজিরা কম, স্থগিত রাখতে হল লোকসভা

সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ঠিক ভাবে চলার জন্য আজ সকালেই সব রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি সংবাদপত্রের অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁর মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই একেবারে উল্টো ছবি দেখা গেল লোকসভায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৬
Share:

সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ঠিক ভাবে চলার জন্য আজ সকালেই সব রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি সংবাদপত্রের অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁর মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই একেবারে উল্টো ছবি দেখা গেল লোকসভায়। সেখানে সাংসদ ও মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির হার এতটাই কম ছিল যে স্থগিত করে দিতে হল অধিবেশনের কাজ।

Advertisement

দুপুরের পরে লোকসভার কাজ ফের শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেখা যায়, সে সময়ে বিরোধী দলের সাংসদরা তুলনামুলক ভাবে বেশি সংখ্যায় উপস্থিত থাকলেও মোদীর নিজের দলের বেশির ভাগ সাংসদই হাজির নেই। নিয়ম অনুযায়ী, মোট সদস্যের অন্তত দশ শতাংশ হাজির থাকলেই শুরু করা যেতে পারে সংসদের অধিবেশনের কাজ। কিন্তু আজ সেই সংখ্যা না থাকায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। সাংসদ ও মন্ত্রীদের অধিবেশনে হাজির করাতে ঘণ্টি বাজতে থাকে। কিন্তু কোথায় শাসক দলের সাংসদরা! লোকসভায় বিজেপির ২৮২ জন সাংসদের মধ্যে তখন দেখা যাচ্ছে মাত্র ৪-৫ জনকে। এমনকী শুরুতে হাজির হননি সংসদীয় মন্ত্রীও। ‘কোরাম’ না হওয়ায় লোকসভায় আসতে পারছেন না স্পিকারও সুমিত্রা মহাজনও। কিছু ক্ষণ কাটতেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিরোধী দলের সাংসদরা। ছুটে আসেন সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডি। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পৌঁছে যান সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর ঘরে। টেলিফোন করে মন্ত্রী ও সাংসদদের ডাকার পালা শুরু হয়ে যায়। বিজেপির নেতারা ছোটেন সেন্ট্রাল হলে। অনেক সময়ে সেখানে গল্পগুজবে মেতে থাকেন সাংসদরা। কিন্তু আজ সেখানেও ফাঁকা পডে রয়েছে সব বেঞ্চ। এর পরে আর শেষ রক্ষা করা যায়নি। সেক্রেটারি জেনারেলের পরামর্শে স্থগিত করে দেওয়া হয় লোকসভার অধিবেশন।

যে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই সরকারের কর্ম সংস্কৃতি বদলে দেওয়ার কথা বলছেন, এমনকী দলীয় বৈঠকে সময় মতো হাজির হতে না পারায় দরজার বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন দলের সাংসদদের, তাঁরই দলের সাংসদরা কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটালেন, সে প্রশ্ন উঠছে। তবে অনেকেই ঘরোয়া ভাবে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, শুক্রবার সপ্তাহের শেষ কাজের দিনে এমনিতেই সাংসদদের নির্বাচনী কেন্দ্রে যাওয়ার তাড়া থাকে। ফলে বিকেলের দিকে হাজিরা থাকে কম, তার উপরে আজ ছিল সাংসদদের ফ্রি মেডিক্যাল চেক আপের দিন। সংসদ ভবনেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করাতে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। ফলে বিকেলের পরে অধিবেশনে হাজির হতে পারেননি। তবে প্রশ্ন উঠেছে, ঠিক অধিবেশনের সময়েও কী কারণে স্বাস্থ্যপরীক্ষার সময় দেওয়া হল, তা নিয়েও।

Advertisement

লোকসভার মতো রাজ্যসভাতেও এ দিন সাংসদদের হাজিরা কম থাকায় সমস্যা তৈরি হয়। দুপুর দু’টো নাগাদ অধিবেশন শুরুর কথা থাকলেও আড়াইটা পর্যন্ত তা স্থগিত হয়ে যায়। তার আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংহের ইস্তফার দাবিতে দফায় দফায় মুলতবি হয়ে যায় রাজ্যসভার কাজ। তবে এই ‘কোরাম’ না থাকার কারণ দেখিয়েই এক বার চরম অস্বস্তি থেকে বেঁচে যায় মোদী সরকার। একটি বেসরকারি বিল নিয়ে আলোচনার সময়ে ভোটাভুটির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সমাজবাদী পার্টির বিশ্বম্ভরপ্রসাদ নিষাদ তাঁর বিলটি প্রত্যাহার না করে ভোটাভুটি করাতে চান। সেই সময়ে ভোট এড়াতে রাজ্যসভা থেকে বেরিয়ে যান বিজেপির মন্ত্রী ও সাংসদরা। রাজ্যসভায় ভোটের জন্য অন্ততপক্ষে ২৫ জনের উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ২১জন সদস্য উপস্থিত থাকায় ভোট হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন