হয়রানি: বার করে আনা হচ্ছে আটক যাত্রীদের। ছবি: পিটিআই।
জীবনের প্রথম মেট্রো। তা-ও আবার নিজের শহরে। খানকতক নিজস্বী না-হলে চলে! এমন একটা মারকাটারি মেজাজেই দিনটা শুরু করেছিল বছর পনেরোর সত্যপ্রকাশ। কিন্তু শেষটা আর ভাল হল কই! যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মাঝপথেই থমকে গেল এসি রেক। তার পর কোনও মতে স্টেশন থেকে বেরিয়ে ঘেমেনেয়ে একসা হয়ে যখন সে স্কুলে গিয়ে পৌঁছল, তত ক্ষণে তালা প়ড়ে গিয়েছে মূল ফটকে।
গোড়াতেই গলদ! প্রথম দিন থেকেই খোঁড়াতে শুরু করল লখনউ মেট্রো। আলো নেই, বিকল এসি-ও। আর এরই মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক মেট্রোর কামরায় আটকা প়ড়ে রইলেন মহিলা ও শিশু-সহ সত্যপ্রকাশের মতো অন্তত শ’খানেক যাত্রী। শেষমেশ এল উদ্ধারকারী দল। সফরের মাঝপথেই মেট্রোর মায়া ত্যাগ করে বেরিয়ে এলেন আতঙ্কিত যাত্রীরা। সোজা পথে নয়, চালকের কেবিনের পাশের গেট দিয়ে। ট্রেন তখন মাটির উপরে।
শিশুমৃত্যুর ধাক্কা এখনও সামলে ওঠা যায়নি। তার উপরে মেট্রোতেও মুখ পুড়ল যোগী অাদিত্যনাথের।
সকাল ৭টা ১৫-য় চারবাগ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ট্রেনটি। গন্তব্য ট্রান্সপোর্ট নগর। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্গাপুরি এবং মাওয়াইয়া স্টেশনের মাঝেই থমকে যায় রেক।
গত কালই সাড়ে আট কিলোমিটারের এই মেট্রোপথ মহা ধুমধামে উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছিলেন রাজ্যপাল রাম নায়েকও। উদ্বোধনের পরে তাঁরা মেট্রোয় সফরও করেছিলেন। কিন্তু আজ বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রা শুরুর পরেই যে ভাবে তাল কাটল, তা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। বস্তুত তাঁর আমলেই প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার এই মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। কেন্দ্রের দিকেই আঙুল তুলে অখিলেশ আজ টুইট করেন, ‘‘কেন্দ্র তো সব দিক খতিয়ে দেখেই লখনউ মেট্রোকে ছাড়পত্র দিয়েছিল, তা-ও প্রথম দিনে এমন বিপত্তি!’’
নেটিজেনরা কেউ তোপ দাগছেন, তো কেউ ঝাঁঝালো কটাক্ষে বিঁধছেন যোগী প্রশাসনকে। ছাড় পাননি অখিলেশও। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন লখনউ মেট্রো আধিকারিকদের সঙ্গে তোলা ছবি পোস্ট করে কালই বলেছিলেন, ‘‘ট্রেনের ইঞ্জিন আগেই চালু হয়েছিল। পরে কামরা তো আসবেই।’’ আজ সেই টুইটকে অস্ত্র করেই এক নেটিজেন কটাক্ষ করেন— ‘‘ইঞ্জিনটাই তো দেখছি আগেভাগে বিগড়ে গেল!’’