প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
এ বার দেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন মধ্যপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী জগদীশ দেবড়া। সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রশিক্ষণের একটি কর্মসূচিতে গিয়ে শুক্রবার তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পায়ে ‘নতজানু’ রয়েছে দেশের সেনা-জওয়ানেরা। এর আগে মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ সেনা অফিসার কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এ বার জগদীশের মন্তব্যের পরে আবার সরব হয়েছে বিরোধী দল কংগ্রেস। তাদের কটাক্ষ, এ ভাবে দেশের সেনাবাহিনীকে অবমাননা করছেন বিজেপির মন্ত্রীরা। বিজেপি যদিও দাবি করেছে যে, মধ্যপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ‘বিকৃত’ করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
শুক্রবার জবলপুরে সিভিক ভলান্টিয়ারদের একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ছিল। সেখানে গিয়েই রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী জগদীশ বলেন, ‘‘আজ পুরো দেশ, দেশের সেনা, জওয়ান প্রধানমন্ত্রীর পায়ে নতজানু রয়েছেন। তিনি যে জবাব দিয়েছেন, তার যতই প্রশংসা করো, কম হবে।’’
এর পরেই সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাদের কটাক্ষ, দেশের সেনাবাহিনীকে অপমান করার জন্যই এ সব করছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটোয়ারি বলেন, ‘‘মোহন যাদব সরকারের মন্ত্রী বিজয় শাহ সাহসী কর্নেলকে বলেছেন জঙ্গিদের বোন। উপমুখ্যমন্ত্রী বলছেন, দেশের সেনার প্রধানমন্ত্রীর পায়ে নতজানু রয়েছে। এই নিয়ে সংবাদমাধ্যম মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে তিনি রেগে যাচ্ছেন। অর্থহীন জবাব দিচ্ছেন।’’ কংগ্রেস নেতা আরও জানিয়েছেন, এই ধরনের মন্তব্যের জন্য এই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার পরিবর্তে তাঁদের আড়াল করছে বিজেপি। তাঁর কথায়, ‘‘এর থেকে প্রমাণ মিলল যে, বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব সেনাকে অপদস্ত করার জন্য সম্মিলিত প্রকল্প শুরু করেছে।’’
বিজেপি যদিও পাল্টা দাবি করেছে যে, মধ্যপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ‘বিকৃত’ করেছে কংগ্রেস। রাজ্যের বিজেপি মুখপাত্র আশিস আগরওয়াল বলেন, ‘‘না এই দেশ, না দেশের সেনাকে সম্মান করেন কংগ্রেস নেতারা। নিজেদের বক্তব্যের স্বার্থে ওই মন্তব্যের শব্দ এবং আবেগকে বিকৃত করা হয়েছে। জগদীশ দেবড়া স্পষ্টই জানিয়েছেন যে, গোটা দেশ আমাদের সেনাবাহিনীর সাহসকে কুর্নিশ জানাচ্ছে, যারা পাকিস্তানে অভিযান চালিয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে কংগ্রেস এই মন্তব্যকে বিকৃত করতে চাইলে করুক। বিজেপির প্রত্যেক নেতা এবং কর্মী ভারতীয় সেনার সাহস, শৌর্যকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন।’’
এর আগে সেনা অফিসার কর্নেল কুরেশির নাম না নিয়ে বিজেপির মন্ত্রী বিজয় বলেছিলেন, ‘‘যারা আমাদের মা-মেয়ের সিঁদুর মুছে দিয়েছে, তাদের বোনকেই ব্যবহার করে হামলাকারীদের শায়েস্তা করেছি। মোদীজি ওদের বোনকে দিয়েই উচিত শিক্ষা দিয়ে দিয়েছেন। মোদীজি তো আর ওদের মতো ব্যবহার করতে পারেন না। তাই ওদের সম্প্রদায়ের বোনকে দিয়েই ওদের বারোটা বাজিয়েছেন।’’ ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন কর্নেল কুরেশি। এই অভিযানের খবর নিয়মিত সংবাদমাধ্যমের সামনেও তুলে ধরেছিলেন তিনি। এই মন্তব্যের জন্য বিজয়কে ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিশ।