বন্‌ধ ঘিরে তুলকালাম মহারাষ্ট্রে

মরাঠি সংরক্ষণের দাবিতে ডাকা বন্‌ধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ল মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায়। যার জেরে মাঝপথেই প্রত্যাহার করতে হল মুম্বই বন্‌ধ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪৯
Share:

পাথর ছোড়া জনতাকে ঠেকাতে লাঠিচার্জ পুলিশের। মহারাষ্ট্রের ঠাণেতে। বুধবার।  ছবি:  পিটিআই

মরাঠি সংরক্ষণের দাবিতে ডাকা বন্‌ধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ল মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায়। যার জেরে মাঝপথেই প্রত্যাহার করতে হল মুম্বই বন্‌ধ।

Advertisement

আজ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় পুড়েছে বাস, বন্ধ দোকানপাট, রেল ও মুম্বইয়ের সঙ্গে সংযোগকারী কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিক্ষোভকারীরা আটকে দেওয়ায় জনজীবন বেহাল হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে আর এক আন্দোলনকারীর মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। ঔরঙ্গাবাদের জগন্নাথ সোনাভনে কাল বিষ খেয়েছিলেন। আজ শহরের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। আন্দোলনের জেরে শিবসেনা ও এনসিপি-র দুই বিধায়ক আজ ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। স্পিকারকে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।

গোটা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে মরাঠিদের দু’টি সংগঠন। ‘মরাঠা ক্রান্তি মোর্চা’ মুম্বই বন্‌ধের ডাক দিয়েছিল আজ। আর ‘সকল মরাঠা সমাজ’ নবী মুম্বই ও পানভেলে বন্‌ধের ডাক দেয়। ওই এলাকাগুলিতে জমায়েত হটাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েক ঘণ্টা মুম্বই-পুণে এবং মুম্বই গোয়া হাইওয়ে অবরোধ করলে যাতায়াতের ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকে ঢিল ছোড়া হয়েছে। আহত হয়েছেন এক এসপি-সহ তিন পুলিশকর্মী। তবে মরাঠা নেতারা পাল্টা অভিযোগ এনেছেন, রাজনীতির অঙ্কেই তাঁদের সংগঠনের বাইরের লোকেরা হিংসা ছড়িয়েছে। সে জন্যই বিকেল তিনটেয় মুম্বই বন্‌ধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাঁদের হুমকি, দাবি মানা না হলে ৯ অগস্ট ফের মুম্বই বন্‌ধ হতে পারে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের ইস্তফা ও তাঁর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে অনড় বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পন্ধারপুরে সফর বাতিল করলেও মন্তব্য করেছেন, মরাঠি সম্প্রদায়ের একাংশ সেখানে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সংরক্ষণ আন্দোলনের নেতা বীরেন্দ্র পওয়ার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এসি ঘরে বসে আমাদের কথা শুনতে আগ্রহই দেখাচ্ছেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, গত দু’দিনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও আলোচনা শুরু করতে কোনও প্রতিনিধিকে নিয়োগ করেনি সরকার। তবে আজ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় আলোচনার প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে যদিও এখনও সাড়া মেলেনি।

সংরক্ষণ আন্দোলনে হিংসা ছড়ানোয় রাজনীতির চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সংঘর্ষের পিছনে বিরোধীদের দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, কয়েক জন নেতা মহারাষ্ট্রকে জাতপাতের সমীকরণে ভাগ করতে চাইছেন। সংরক্ষণ আন্দোলনের মোকাবিলায় সরকারের সংবেদনহীনতার অভিযোগ এনেছেন বিরোধীরা। এরই মধ্যে ফডণবীসের এক মন্ত্রী চন্দ্রকান্ত পাটিল মন্তব্য করেন, ‘‘হিংসা ছড়িয়ে মরাঠিরা কিছুই পাবে না।’’ সেই কথা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতে আজ ক্ষমা চেয়েছেন মন্ত্রী। মাঠে নেমেছে শিবসেনাও। শিবসেনা নেতা ও বিধান পরিষদের সদস্য হর্ষবর্ধন যাদবের দাবি, চাকরি ও শিক্ষায় মরাঠি সংরক্ষণে এখনই অর্ডিন্যান্স আনুক সরকার। মহারাষ্ট্রে ৩০% মরাঠি। প্রভাবশালী এই সম্প্রদায় বেঁকে বসায় বিজেপি সঙ্কটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন