Husband kills Wife

রোগে শয্যাশায়ী স্ত্রীকে ‘পরিকল্পনা করে খুন’! ৭১-র বৃদ্ধকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল মহারাষ্ট্রের আদালত

স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গলায় মঙ্গলসূত্র পরিয়ে দিয়েছিলেন স্বামী। ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ১৬:২৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রোগে শয্যাশায়ী স্ত্রীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল ৭১ বছরের এক বৃদ্ধের। মহারাষ্ট্রের ঠাণের নিম্ন আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, শয্যাশায়ী স্ত্রীকে ‘ইচ্ছাকৃত এবং পরিকল্পিত ভাবে’ হত্যা করেছেন বৃদ্ধ স্বামী। শুধু তাই নয়, প্রমাণ চাপা দিতে মৃত স্ত্রীর গলায় মঙ্গলসূত্র পরিয়েছিলেন দোষী ব্যক্তি!

Advertisement

আসামি স্বামীর নাম শোভনাথ রাজেশ্বর শুক্ল। তাঁর স্ত্রীর শ্রদ্ধা শুক্ল। ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর ঠাণের বাসিন্দা শ্রদ্ধা নিজের বাড়িতে মারা যান। বাবার কাছ থেকে মায়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে এক ছেলে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু মায়ের শরীরে বেশ কিছু দাগ দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতেই বৃদ্ধার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ছেলের অভিযোগ, মায়ের গলায় সন্দেহজনক দাগ ছিল। সেটা মঙ্গলসূত্র পরিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও দেখা যায়, ছেলের সন্দেহই সত্যি। শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বৃদ্ধাকে। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।

আদালতে সরকারি আইনজীবী জানান, শ্রদ্ধার দুটো বিয়ে ছিল। প্রথম পক্ষের তিন সন্তান। শোভনাথ নামে যে ব্যক্তিকে তিনি বিয়ে করেন তাঁরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তিনি বিপত্নীক ছিলেন। শ্রদ্ধা ছিলেন বিধবা। বৃদ্ধ বয়সে এসে দম্পতির ঠোকাঠুকি লাগে একটি সম্পত্তির ভাগ নিয়ে।

Advertisement

প্রথম পক্ষের স্বামীর সম্পত্তির ভাগ পেয়েছিলেন শ্রদ্ধা। সেটি বিক্রি করে একটি বাড়ি তৈরি করেন ওই বৃদ্ধা। বাড়িটি প্রথম পক্ষের বড় ছেলেকে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শোভনাথ তাতে বাধা দেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল, বাড়িটি তাঁর প্রথম পক্ষের পুত্র অশোককে দেওয়া হবে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধা এবং স্বামীর উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।

আদালতে সরকারি আইনজীবী জানান, ২০১৯ সালের জুন থেকে শয্যাশায়ী ছিলেন শ্রদ্ধা। বৃদ্ধার দুই ছেলে বিশাল এবং অমল থাকতেন বাইরে। তাঁরা অভিযোগ করেন, নানা সময়ে সৎবাবা তাঁদের কাছে অনুযোগ করতেন যে, স্ত্রীর তাঁর কাছে বোঝা হয়ে উঠেছেন। এমনকি, তাঁদের মাকে খুন করে তিনি জেলে যাবেন বলেও কখনও কখনও হুমকি দিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। অন্য দিকে, শোভনাথের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, শ্রদ্ধা খুন হননি, আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণ, শয্যাশায়ী ওই বৃদ্ধার পক্ষে আত্মহত্যা করা সম্ভব ছিল না। বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষ্যের ভিত্তিতে স্ত্রীকে খুনের দায়ে স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। আদালত জানায়, স্ত্রীর প্রতি আসামির অতীতের বেশ কিছু ব্যবহার এবং কর্মকাণ্ড দেখে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে খুনটা তিনি-ই করেছেন। এমনকি, খুনের পর স্ত্রীর গলায় মঙ্গলসূত্র দিয়ে ক্ষতচিহ্ন ঢাকতে চেয়েছিলেন বৃদ্ধ। স্ত্রীকে খুন করে সেটা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালাতে চেয়েছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement