জিন্নাকেই প্রধানমন্ত্রীর পদে চেয়েছিলেন গাঁধী: দলাই লামা

গোয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের এক অনুষ্ঠানে দলাই লামা এ দিন আরও দাবি করেছেন, ‘‘নেহরু সে দিন যদি গাঁধীর প্রস্তাব মেনে নিতেন, তা হলে হয়তো দেশভাগ হত না।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পানাজি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৬
Share:

ধর্মগুরু: বুধবার গোয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের অনুষ্ঠানে দলাই লামা। ছবি: পিটিআই।

মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চেয়েছিলেন মহম্মদ আলি জিন্নাকে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে আপত্তি তোলেন জওহরলাল নেহরু। তাঁর এই সিদ্ধান্ত আত্মকেন্দ্রিকতা ফুটে উঠেছিল— দেশভাগ ও এই উপমহাদেশের রাজনীতিকদের শাসন ক্ষমতায় বসা নিয়ে বলতে গিয়ে আজ এই দাবি করেছেন ভারতে আশ্রিত ৮৩ বছর বয়সি তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। তাঁর এই বক্তব্যকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নও উঠে গিয়েছে।

Advertisement

গোয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের এক অনুষ্ঠানে দলাই লামা এ দিন আরও দাবি করেছেন, ‘‘নেহরু সে দিন যদি গাঁধীর প্রস্তাব মেনে নিতেন, তা হলে হয়তো দেশভাগ হত না।’’ সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রসঙ্গে এক ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে তিব্বতি ধর্মগুরু বলেন, ‘‘সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার তুলনায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অনেক বেশি কার্যকরী। কারণ, সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা মুষ্টিমেয় কয়েক জনের হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেয়। যা খুবই বিপজ্জনক।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি টেনে আনেন জিন্নাকে প্রধানমন্ত্রী করতে গাঁধীর ইচ্ছা আর সেই প্রস্তাবে নেহরুর আপত্তির কথা। দলাই লামার মন্তব্য, ‘‘আমার মনে হয়, নেহরু নিজেই প্রধানমন্ত্রী হতে চাইছেন, এটা তাঁর তরফে কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক ভাবনা। গাঁধীর ভাবনা যদি বাস্তবায়িত হত, তা হলে ভারত-পাকিস্তান এক হয়ে থাকতে পারত।’’

তবে দলাই লামার মতে, নেহরু ‘অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, তীক্ষ্ণ বুদ্ধির রাজনীতিক’ ছিলেন। ‘কখনও কখনও অবশ্য ভুল হয়েই যায়’— মন্তব্য করেন তিনি। তবে নেহরু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে যে ভাবে চিনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এই ধর্মগুরুকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন— সেই প্রসঙ্গও আজ তুলেছেন অনেকে। কারও কারও মতে, নেহরু সে দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী না থাকলে হয়তো চিনের জেলে ঠাঁই হত দলাই লামার।

Advertisement

আরও পড়ুন: কড়া আর্থিক সংস্কারের প্রশ্নে সঙ্ঘের চাপে নতিস্বীকার মোদীর

পানাজির অনুষ্ঠানে তিব্বত ছেড়ে তাঁর পালিয়ে আসার অভিজ্ঞতার কথাও এ দিন শুনিয়েছেন দলাই লামা। জীবনের সব চেয়ে ভয়াবহ দিনগুলির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘১৯৫৬ সালেই সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। তিব্বতের মানুষের উপর ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করেছিল চিনা শাসকেরা। তার পরে ১৯৫৯ সালের ১৭ মার্চের রাতে দেশ থেকে পালিয়ে আসি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পরের দিনটা দেখতে পাব কিনা, সব সময়ে সেই ভাবনাই গ্রাস করেছিল। আর যে পথে পালিয়েছি, সেখানেও পদে পদে ছিল চিনা সেনার হাতে বন্দি হওয়ার সম্ভাবনা।’’ তিব্বতি ধর্মগুরু বলেন, ‘‘চিনের শক্তি শুধু তাদের অস্ত্রে। কিন্তু আমাদের শক্তি লুকিয়ে রয়েছে সত্যে। অস্ত্র দিয়ে হয়তো তাৎক্ষণিক লাভ হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ সময়ের প্রেক্ষিতে দেখা যায়, সত্যের জোর বন্দুকের থেকে অনেক বেশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন