কোনও বিদেশি গুপ্তচর সংস্থা নয়। কোনও ‘রহস্যজনক ব্যক্তি’ নয়। মহাত্মা গাঁধীকে গুলি করে খুন করেছিলেন নাথুরাম গডসেই।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এ কথা জানিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী অমরেন্দ্র শরণ। ‘জাতির জনক’-এর হত্যাকাণ্ডে গডসে ছাড়াও অন্য কারও জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শরণ।
মহাত্মা গাঁধীকে নাথুরাম গডসে খুন করেননি, ওই হত্যাকাণ্ডে কোনও বিদেশি গুপ্তচর সংস্থার হাত ছিল, এই দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন ‘অভিনব ভারত’ নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পঙ্কজ ফড়নীশ। তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই হত্যাকাণ্ডের পর বিভিন্ন সংবাদপত্রেও বেরিয়েছিল, গাঁধীর শরীরে ৪টি বুলেটের ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। আর সেই চতুর্থ বুলেটটিই গাঁধীর শরীরে ঢুকে তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। সেই বুলেটটি এসেছিল রহস্যময় কোনও ব্যাক্তির বন্দুক থেকে, যিনি কোনও বিদেশি গুপ্তচর সংস্থার এজেন্ট হতে পারেন। পঙ্কজ নিজেকে বীর সাভারকরের অনুগামী বলেও দাবি করেছিলেন।
ফড়নীশের বক্তব্য ছিল, মহাত্মা গাঁধীর হত্যাকাণ্ডে গডসের নাম জড়িয়ে মরাঠিদের, বিশেষ করে, বীর সাভারকরকে হেয় করা হয়েছে। ওই ঘটনায় গডসের কোনও ভূমিকা ছিল না। ফড়নীশ ওই হত্যাকাণ্ডের পুনর্তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- দমনেই শান্তি অধরা কাশ্মীরে, চিদম্বরমের তির মোদীর দিকে
আরও পড়ুন- স্বচ্ছতা চান না! খোঁচা জেটলির
ওই পিটিশনের পর প্রবীণ আইনজীবী শরণকে গাঁধী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত যাবতীয় নথিপত্র পরীক্ষা করে তাঁর মতামত জানাতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
গাঁধী হত্যা মামলার ৪ হাজার পাতার রেকর্ড ও ’৬৯ সালের জীবনলাল কপূর তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট ও অন্যান্য নথিপত্র খতিয়ে দেখে সোমবার তাঁর মতামত শীর্ষ আদালতে জানান শরণ। শরণ আদালতে জানান, চতুর্থ বুলেটই গাঁধীর শরীরে ঢুকে তাঁর মৃত্যু ঘটিয়েছিল এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর সেই বুলেট গডসে ছাড়া অন্য কারও বন্দুক থেকে ছোড়া হয়েছিল, মেলেনি এমন প্রমাণও। তিনি আদালতে বলেন, ‘‘গাঁধী হত্যাকাণ্ডে কোনও বিদেশি গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে পিটিশনে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। তার স্বপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি।’’ তাই ওই হত্যাকাণ্ডের পুনর্তদন্তের জন্য নতুন কোনও কমিশন গড়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। ১২ জানুয়ারি ফের বিষযটি সুপ্রিম কোর্টে উঠবে।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, শীর্ষ আদালত প্রবীণ আইনজীবী অমরেন্দ্র শরণের রিপোর্টের ভিত্তিতে এ নিয়ে পুনর্তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু, তা ঠিক নয়। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)