মল্লিকার্জুন খড়গে। ফাইল চিত্র।
দুর্নীতি দমনে লোকপাল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করার শেষ বৈঠকও বয়কট করলেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে। এই নিয়ে টানা সাতবার তিনি এই বৈঠক বয়কট করলেন। ‘বিশেষ আমন্ত্রিত’ হিসেবে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও লোকপাল নিয়োগের প্রক্রিয়ায় তাঁর কোনও সক্রিয় ভূমিকা থাকবে না এবং লোকপালের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিরোধীদের তরফে এই নীরব উপস্থিতির কোনও মূল্য নেই— এই যুক্তিতেই লোকপাল বৈঠকে তিনি থাকবেন না বলে চিঠি লিখে জানিয়েছেন মল্লিকার্জুন।
লোকপাল নিয়োগ নিয়ে নির্বাচক কমিটির প্যানেল কবে বৈঠকে বসবে, তা নির্দিষ্ট করতে কেন্দ্রকে দশ দিনের সময়সীমা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজকেই। অর্থাৎ আজকেই বৈঠকে বসার শেষ সুযোগ ছিল কেন্দ্রের সামনে। মল্লিকার্জুনের এই সিদ্ধান্তে বিশ বাঁও জলে গেল সেই প্রক্রিয়া।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে মল্লিকার্জুন জানিয়েছেন, ‘বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকলে লোকপাল নিয়োগে আমার কোনও ভূমিকা থাকবে না। এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বিরোধীদের নীরব করে রাখার বিষয়টি আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’
আরও পড়ুন: টম ভডক্কন বড় নেতা নন, অস্বস্তি ঢাকতে বললেন রাহুল
বিরোধী দলের নেতা হিসেবে লোকপাল নির্বাচক কমিটির স্থায়ী সদস্য হিসেবে মল্লিকার্জুন খড়গেকে না রাখা নিয়ে বিতর্ক শুরু থেকেই। সংসদের ৫৪৩ সদস্যের ন্যূনতম দশ শতাংশ আসন না পেলে বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পাওয়া যায় না। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস মাত্র ৪৪টি আসন পেয়েছিল। তাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে স্থায়ী সদস্য হিসেবে কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা মল্লিকার্জুন খড়গেকে রাখতো না কেন্দ্র। কংগ্রেসের আপত্তি সেখানেই। তাদের পাল্টা অভিযোগ, এই বিষয়টিকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে গত পাঁচ বছরে লোকপাল নিয়োগের প্রক্রিয়াই শুরু করছে না কেন্দ্র,কী করে বিরোধীদের এই নির্বাচক কমিটির অন্তর্ভূক্ত করা যায়, সেই ভাবনাও ইচ্ছাকৃত ভাবে দূরে সরিয়ে রেখেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে অংশ নিতে জামিনের আবেদন লালুর, সিবিআইয়ের মতামত চাইল সুপ্রিম কোর্ট
এই জটের রফাসূত্র খুঁজে বের করতে শেষ পর্যন্ত উদ্যোগী হন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তিনিই প্রথম বলেন, ‘‘সিবিআই অধিকর্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা সামনে এসেছিল। কিন্তু তখন সব থেকে বড় বিরোধী দলের নেতাকে এই নির্বাচক কমিটিতে রাখার জন্য আইনি সংশোধন করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে লোকপাল নিয়োগের ক্ষেত্রে এইরকম কোনও সংশোধনী আনা হয়নি। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে কংগ্রেস দলনেতাকে ডাকতেই পারে।’’
যদিও এই বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে লোকপাল নির্বাচন কমিটির বৈঠকে হাজির হওয়া নিয়ে সব সময়ই আপত্তি জানিয়ে এসেছে কংগ্রেস। নিছক উপস্থিতির জন্য এই বৈঠকে থাকা সম্ভব নয়, এই যুক্তিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ে মোট সাত বার এই বৈঠকে গরহাজির থাকল কংগ্রেস।