পাশে আছি, রাহুলকে বার্তা পাঠালেন মমতা

পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েও কংগ্রেস ও বামেদের ডাকা ধর্মঘটে সামিল হয়নি তৃণমূল। তবে পশ্চিমবঙ্গে এই অবস্থান নিয়েও সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে একজোট হয়েই থাকলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৮
Share:

রাহুল-মমতা। ফাইল চিত্র।

পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েও কংগ্রেস ও বামেদের ডাকা ধর্মঘটে সামিল হয়নি তৃণমূল। তবে পশ্চিমবঙ্গে এই অবস্থান নিয়েও সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে একজোট হয়েই থাকলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আজ বলেন, ‘‘আমরা নীতিগত ভাবে বন্‌ধের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস বন্‌ধের কর্মসূচি নেওয়ার পরে শুক্রবার রাতে আহমেদ পটেল আমাকে ফোন করেছিলেন। তাঁকে জানিয়েছি, মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের প্রশ্নে অবশ্যই আপনাদের সমর্থন করব। কিন্তু বন্‌ধ করা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

তবে বিরোধী ঐক্য যাতে না ভাঙে, সে জন্য দিল্লিতে কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলির ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রতিনিধি হিসেবে সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে পাঠিয়েছিলেন মমতা। রামলীলা ময়দানের মঞ্চে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে সুখেন্দুবাবুর।

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, যে বিষয় নিয়ে বন্‌ধ, তাকে তাঁরা সমর্থন করেন। কিন্তু বন্‌ধ চান না। মমতার যুক্তি, ‘‘এমনিতেই আমাদের ৪৮ হাজার কোটি টাকা দেনা মেটাতে হচ্ছে, তার উপরে আরও ক্ষতি হোক, সেটা চাই না।’’ তৃণমূল নেত্রীর মতে, আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে দেশ। চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে। এর মধ্যেই বন্‌ধ হলে অনেক টাকা নষ্ট। ‘‘এ, বি, সি কিংবা ডি, সরকারে যেই থাকুক, টাকাটা তো গোটা দেশের’’— মন্তব্য মমতার। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘আজকের দিনে বন্‌ধ কোনও সমাধান নয়। মানুষের কথা ভেবে আন্দোলন চলুক। বন্‌ধ শেষ অস্ত্র হিসেবে দেখা যেতে পারে।’’

Advertisement

দিল্লিতে কংগ্রেস সূত্রের দাবি, তৃণমূল নেত্রীর তরফে তাঁদের জানানো হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ধর্মঘট ডাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সাংবিধানিক সমস্যা রয়েছে। তৃণমূল তাই ধর্মঘটে না গিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।

তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মতে, ‘সাধু ও শয়তানে’র গল্পের মতো ভূমিকা নিয়ে চলছে তৃণমূল! ধর্মঘটের সমর্থনে বহরমপুরে মিছিল করার ফাঁকেই সোমবার অধীরবাবু বলেন, ‘‘দিল্লিতে রাহুল গাঁধীর সভায় প্রতিনিধি পাঠিয়ে তৃণমূল সাধু সাজছে। দেখাচ্ছে, তারা বিজেপি-বিরোধী ঐক্যে রয়েছে। আবার বাংলায় পুলিশ দিয়ে, পেশিশক্তি দিয়ে কংগ্রেস এবং বিরোধীদের ধর্মঘট ভাঙছে। অর্থাৎ এখানে তারা শয়তান, দিল্লিতে সাধু!’’ একই সুরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, ‘‘এখানে ধর্মঘটের সমর্থনে যাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁদের নির্মম ভাবে মারা হয়েছে। আবার দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী সভায় তৃণমূল নেত্রী লোক পাঠাচ্ছেন। মানুষকে চিরকাল এ ভাবে বোকা বানানো যাবে না!’’

সূত্রের খবর, রাহুল এ দিন সুখেন্দুবাবুকে জানিয়েছেন, ধর্মঘটের ব্যাপারে মমতার অবস্থানের কথা তিনি জানেন। এ বিষয়ে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে আগেই কথা হয়েছে তাঁর। উনিশের ভোটের আগে মমতার দলকে বাকি বিরোধীদের সঙ্গে একজোট হয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement