যমজ: সেই ক্যালেন্ডার নিয়ে ঠেলাচালক মনা। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে তিনি নিজে! অসম্ভব, অথচ বিশ্বাস না করেও উপায় নেই! সরকারি ক্যালেন্ডারের ছবি বলে কথা!
শিলচরের ঠেলাচালক নির্মল সূত্রধরের পিলে চমকে দিয়েছিল এই ছবি। তবে এই ঘটনাই এখন শহরজুড়ে তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। ভারত সরকারের ডিএভিপি বিভাগের ছাপা এ বারের ক্যালেন্ডারে জুলাই মাসের পাতায় রয়েছে সেই ছবি। প্রধানমন্ত্রী ছত্তীসগঢ়ে সৌরবাতি বিতরণ করছেন। তাঁর দু’দিকে দুই সৌরবাতি প্রাপক। আছেন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহও।
আকাশবাণী শিলচর কেন্দ্রে ছবিটি প্রথম দেখেন নির্মল ওরফে মনা। মোবাইলে ফোন করে ডেকে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। শুরুতেই প্রশ্ন, ‘‘সোলার লাইটটা কোথায়?’’ কিছুই বুঝতে পারছিলেন না তিনি। তখনই ক্যালেন্ডারের ছবি দেখিয়ে আকাশবাণীর কর্মীরা জানতে চান, প্রধানমন্ত্রীর ডানদিকের প্রাপক তিনিই কি-না। ‘‘হ্যাঁ, এ তো আমারই ছবি।’’—বিড়বিড় করেন নির্মল। পর মুহূর্তেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কিন্তু মোদীজির কাছে তো কোনও দিন যাইনি!’’ তাঁর কাঁচুমাচু মুখ দেখে মজাই পাচ্ছিলেন অন্যরা। গম্ভীর সুরে ডিজিটাল টেকনিশিয়ান মৃদুল চক্রবর্তী জানান, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সৌরবাতি নিয়ে বাজারে বিক্রির জন্য তোমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সে জন্যই ডেকে আনা হয়েছে এখানে।’ কেঁদেই ফেলেন নির্মল। এ বার একযোগে হেসে ওঠেন সবাই। বিষয়টি বুঝতে পেরে বা না পেরে হাসার চেষ্টা করেন নির্মলও। তবু বিস্ময়ের ঘোর কাটছিল না, ‘‘একেবারেই আমার মতো তো লোকটা!’’
পরে অবশ্য নির্মলই ছবির কথা প্রচার করেছেন বেশি। যিনিই দেখেছেন, বিস্মিত না হয়ে পারেননি। এতো মিলও হয়! এখন আর নির্মল বা মনা বলেন না কেউ। তাঁকে বোঝাতে গিয়ে একটিই কথা, ওই যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাঁর ছবি রয়েছে ক্যালেন্ডারে!
বিষয়টি মৃদুলবাবুই আবিষ্কার করেছিলেন। জুন মাসের শেষ দিনে টেকনিসিয়ানস রুমের ক্যালেন্ডারে জুলাইয়ের পাতা উল্টে হঠাৎ তাঁর চোখ আটকে যায় তাতে। এ যে মনা! অফিসের কোনও প্রয়োজনে তাকেই তো ডেকে আনা হয়! কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পাশে কী ভাবে? বিস্মিত অন্যরাও। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ডাকিয়ে এনে ‘নির্মল মজা’।