জঙ্গলের পথে। মানসে বারাশিঙার দল। —নিজস্ব চিত্র।
দ্বিতীয় দফায় আরও ১৭টি ‘ইস্টার্ন সোয়াম্প ডিয়ার’ বা বারাশিঙা (স্থানীয় নাম, দল হরিণা) কাজিরাঙা থেকে মানসে পাঠাল অসম বন দফতর।
পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে বারাশিঙার একমাত্র বসতি ছিল কাজিরাঙার জঙ্গল। কিন্তু সেখানে মড়ক লাগলে, ব্যাপক বন্যা হলে বা ক্রমাগত ‘ইনব্রিডিং’য়ে বারাশিঙার সংখ্যা লোপ পেতে পারে বলে পশুপ্রেমীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কাজিরাঙায় বারাশিঙার সংখ্যা হাজার ছাড়াতেই বিকল্প বাসস্থানের খোঁজ শুরু হয়। জঙ্গল ও ঘাসের প্রকৃতি যাচাইয়ের পরে বেছে নেওয়া হয় মানসকে।
কাজিরাঙার ডিএফও রোহিনী শইকিয়া জানান, প্রথম দফায় পরীক্ষামূলক ভাবে ২০১৪ সালে ১৯টি বারাশিঙা মানসে পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে একটি রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও ১৮টি জীবিত রয়েছে। তাদের বাচ্চাও হয়েছে। এখন মানসে বারাশিঙার সংখ্যা ২৫। প্রতিস্থাপন সফল হওয়ায় ফের ২০টি বারাশিঙাকে মানসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। শেষ পর্যন্ত ধরা যায় ১৭টিকে। গত রাতে তাদের মানসের বাঁশবাড়ি রেঞ্জে পৌঁছে দেওয়া হয়।
বাঁশবাড়ির বিট অফিসার পিণ্টু সরকার জানান, আজ সকালে বাঁশবাড়ি রেঞ্জের জঙ্গলে তাদের ছাড়া হয়েছে। বারাশিঙা সংরক্ষণে স্থানীয় মানুষের সহায়তাও খুব দরকার। তাই পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করেছে ডব্লুটিআই।
প্রতিস্থাপনের পর পশু চিকিৎসক তথা ডব্লুটিআইয়ের আঞ্চলির প্রধান ভাস্কর চৌধুরি তাদের দেখভাল করছেন। তিনি জানান, হরিণগুলির মধ্যে দু’টি পুরুষ, ১৫টি স্ত্রী। তাদের আপাতত ‘বোমা’ বা নির্দিষ্ট নজরদারি ঘেরাটোপের মধ্যে রাখা হবে। দেখা হবে, নতুন পরিবেশে তারা মানাতে পারছে কি না, বা কোনও অসুখ হচ্ছে কি না। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এক মাস পর ‘রেডিও কলার’ পরিয়ে তাদের ঘন জঙ্গলে ছাড়া হবে। বন দফতর জানিয়েছে, কাজিরাঙায় এখন বারাশিঙার সংখ্যা ১ হাজার ১২৫টি। মানসে ৪২টি।