উত্তপ্ত: মণিপুরের জিরিবামে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
অসমে যখন এনআরসি নবীকরণ নিয়ে আতঙ্কে ভাষা ও ধর্মভিত্তিক সংখ্যালঘুরা, তখনই মণিপুর বিধানসভায় ‘মণিপুর পিপলস প্রোটেকশন বিল-২০১৮’ পাশ হল। এই বিল অনুযায়ী, ১৯৫১-র আগে মণিপুরে আসা অ-মণিপুরিরাই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পেলেন। ভিন্ রাজ্য থেকে আসা বাকি বাসিন্দাদের, আইন পাশ হওয়ার এক মাসের মধ্যে সরকারি খাতায় ‘বহিরাগত’ হিসেবে নাম নথিভুক্ত করিয়ে সাময়িক ভাবে থাকার পারমিট (ইনার লাইন পারমিট) নিতে হবে। পারমিট মিলবে সর্বোচ্চ ছ’মাসের জন্য। যাঁরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী তাঁরা পাঁচ বছর পর্যন্ত পারমিট পেতে পারেন। এ বার মণিপুরে ঢুকতেও ইনার লাইন পারমিট নিতে হবে।
এই পারমিটের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া যৌথ মঞ্চের দাবি, রাজ্যে মণিপুরি ১৯ লক্ষ। বহিরাগত ৯ লক্ষেরও বেশি। স্থানীয় দোকান ও ব্যবসা ভিন্ রাজ্য থেকে আসা বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে। মণিপুরিদের অস্তিত্ব ও ঐতিহ্য রক্ষায় এই আইন দরকার ছিল।
এর ফলে আতঙ্কে রাজ্যের হিন্দি-বাংলাভাষীরা। প্রতিবাদী মঞ্চ গড়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, মণিপুর পৃথক রাজ্য হয়েছে ১৯৭২ সালে। তার আগে অসম ও বাংলাদেশ থেকে অনেকেই মণিপুরের বিভিন্ন অংশে বাস করেছেন। পার্বত্য মণিপুরে থাকা নাগারাও ওই বিলকে মেইতেইদের চক্রান্ত বলে দাবি করেন। ‘জিরিবাম প্রতিবাদী সংখ্যালঘু মঞ্চ’-এর দাবি, ভিত্তিবর্ষ ১৯৫১ সাল করা ঠিক নয়। কারণ সেই সময় মণিপুর রাজ্যেরই অস্তিত্ব ছিল না। ছিল না নাগরিক পঞ্জি। আজ জিরিবামে অ-মণিপুরি নাগরিক মঞ্চের আহ্বানে মহিলারা ভিত্তিবর্ষ বদলের দাবিতে ধর্নায় বসলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুরুষরা ঢিল ছুড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও শূন্যে গুলি ছোড়ে। ১০ জন আন্দোলনকারী জখম হন। জখম হন ৪ পুলিশকর্মী।