Rahul Gandhi

ইম্ফলে সভার অনুমতি পেলেন না রাহুল গান্ধী

মণিপুরে গত মে মাস থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা চলছে। তা থামাতে না পারার জন্য কেন্দ্রের ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের দিকেই ব্যর্থতার আঙুল উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২২
Share:

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

মাত্র চার দিন পরে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু হচ্ছে মণিপুর থেকে। ঠিক ছিল, ১৪ জানুয়ারি ইম্ফল শহরের কেন্দ্রে প্যালেস চত্বরের সরকারি ময়দানে জনসভা করে দেশের পূর্ব থেকে পশ্চিম অভিমুখে রাহুলের এই যাত্রা শুরু হবে। কিন্তু মণিপুরের বিজেপি-শাসিত সরকার আজ সেই রাজ্যের ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি’-র যুক্তি দিয়ে জনসভা আয়োজনের আর্জি খারিজ করে দিল। মণিপুর সরকার জানিয়েছে, প্যালেস চত্বরে শুধুমাত্র পতাকা উত্তোলন করা যাবে। সেখানে সীমিত সংখ্যক লোক জড়ো হতে পারবেন। তাঁদের নাম আগেভাগে জেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে। এই বন্দোবস্তের কথা শুনে কংগ্রেস ইম্ফল থেকে কর্মসূচি সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে থৌবালে। পতাকা উত্তোলন ও যাত্রার সূচনা হবে সেখানেই।

Advertisement

মণিপুরে গত মে মাস থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা চলছে। তা থামাতে না পারার জন্য কেন্দ্রের ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের দিকেই ব্যর্থতার আঙুল উঠেছে। সেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে ‘কাজে লাগিয়ে’ রাহুলের যাত্রার শুরুতে জনসভার অনুমতি না-দেওয়াকে আজ কংগ্রেস ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ও ‘গণতন্ত্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছে। কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইম্ফলের ওই ময়দানের পরিবর্তে থৌবালে খোংজম এলাকার এক বেসরকারি ময়দান থেকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু হবে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহকে কংগ্রেস নেতারা তা মৌখিক ভাবে জানিয়ে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাতে সায় দিয়েছেন বলেকংগ্রেসের দাবি।

কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘যখন পূর্ব থেকে পশ্চিম ভারতে যাত্রা শুরু হচ্ছে, তখন কী ভাবে মণিপুরকে এড়িয়ে যাওয়া যায়? সে ক্ষেত্রে আমরা দেশের মানুষকে কী বার্তা দেব?” কংগ্রেসের বক্তব্য, এক সপ্তাহ আগেই তারা মণিপুর সরকারের কাছে ইম্ফলে জনসভার অনুমতি চেয়েছিল। আজ সকালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে মেঘচন্দ্র, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইমোবি সিংহের নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতারা মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। তখনই বীরেন জানিয়ে দেন, জনসভার অনুমতি দেওয়া হবে না। কংগ্রেস নেতারাও জানান, মণিপুর থেকেই রাহুলের যাত্রা শুরু হবে। ১৪ জানুয়ারি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে রাহুলের যাত্রাকে সবুজ পতাকা দেখাবেন। ওই দিনই মণিপুর পেরিয়ে রাহুলের বাসের কনভয় নাগাল্যান্ডে পৌঁছে যাবে।

Advertisement

মণিপুর থেকে মুম্বই পর্যন্ত রাহুলের যাত্রার জন্য আজ কংগ্রেস প্রচার পুস্তিকা প্রকাশ করে ‘ন্যায় যোদ্ধা’ নামে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দলীয় সমর্থকদের নাম লেখানোর ডাক দিয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, এক বছর আগে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ভারত জোড়ো যাত্রার পরে মণিপুর থেকে মুম্বই পর্যন্ত এই ৬৭১৩ কিলোমিটার যাত্রার মূল দাবি হল, আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ন্যায়। একে কটাক্ষ করে আজ বিজেপির সর্বভারতীয়সভাপতি জে পি নড্ডা গুয়াহাটিতে বলেছেন, ‘‘সংবিধানের ৩৫৬ ধারার অপপ্রয়োগ করে ৯০ বার নির্বাচিত সরকার ফেলে দিয়েছিল কংগ্রেস।তার মধ্যে ইন্দিরা গান্ধীই তা করেছিলেন ৫১ বার।’’ প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বি আর অম্বেডকরকে সংসদে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন। কংগ্রেস ওবিসি-দের প্রতি টানা অন্যায় করেছে। এখন তারা শুধু ভোট চাইতে ন্যায় যাত্রা বার করছে।’’ নড্ডার আহ্বান, রাহুল ন্যায়ের কথা বলতে অসমে এলে তাঁকে ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী হিংসার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন