ঝাড়খণ্ড

মাওবাদী-শঙ্কা কাটাতে বার্তা শিল্পমহলকে

মাওবাদী হামলার আশঙ্কায় ঝাড়খণ্ডকে তাঁদের লগ্নি-তালিকা থেকে দূরেই রাখেন লগ্নিকারীরা। সেই আশঙ্কা দূর করার চেষ্টা করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। লগ্নি টানতে শুক্রবার কলকাতার ‘রোড শো’-এ এসে রঘুবরের দাবি, মাওবাদী নিয়ে শঙ্কা একেবারে ভ্রান্ত। কিছু স্থানীয় গুন্ডা মাওবাদীদের নামে তোলাবাজি চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। শিল্পমহলের প্রতি তাঁর আশ্বাস, ‘‘মুনাফা ও সুরক্ষা, আপনারা দুটোই পাবেন আমাদের রাজ্যে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৫৩
Share:

রঘুবর দাস। — নিজস্ব চিত্র

মাওবাদী হামলার আশঙ্কায় ঝাড়খণ্ডকে তাঁদের লগ্নি-তালিকা থেকে দূরেই রাখেন লগ্নিকারীরা। সেই আশঙ্কা দূর করার চেষ্টা করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। লগ্নি টানতে শুক্রবার কলকাতার ‘রোড শো’-এ এসে রঘুবরের দাবি, মাওবাদী নিয়ে শঙ্কা একেবারে ভ্রান্ত। কিছু স্থানীয় গুন্ডা মাওবাদীদের নামে তোলাবাজি চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। শিল্পমহলের প্রতি তাঁর আশ্বাস, ‘‘মুনাফা ও সুরক্ষা, আপনারা দুটোই পাবেন আমাদের রাজ্যে।’’

Advertisement

১৬ বছর আগে খনিজ পদার্থ ও প্রাকৃতিক বৈচিত্রে পূর্ণ ঝাড়খণ্ড পৃথক রাজ্য হলেও বারবার রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে পড়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরে বিজেপির পায়ের তলার জমি কিছুটা জমি হয়েছে। রঘুবর নিজে এক সময়ে টাটা স্টিলের কর্মী ছিলেন। পরে পুরোপুরি রাজনীতির দিকে পা বাড়ালেও শিল্পের চাহিদা বোঝা তাঁর পক্ষে অনেকটাই সহজ বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট শিবির।

গত দু’বছরে বিনিয়োগ টানতে বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা তুলতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে রঘুবরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল। দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুর পরে এ দিন কলকাতায় এসেছিলেন তাঁরা। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে ঝাড়খণ্ডের মাওবাদী সমস্যার প্রসঙ্গ উঠলে তা উড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। শিল্পমহলকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটি বিক্ষিপ্ত জায়গায় মাওবাদীদের নামে স্থানীয় গুন্ডারা গুন্ডামি চালাচ্ছে। পুলিশ গুন্ডাদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করে, আমাদের পুলিশও তাই করছে। আপনাদের কোনও ভয় নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, ঝাড়খণ্ডে তাঁরা ক্ষমতায় আসার পরে গত দু’বছরে তেমন বড় কোনও নাশকতামূলক ঘটনাও ঘটেনি।

Advertisement

শিল্প-কর্তাদের বরাভয় দেওয়ার পাশাপাশি লগ্নি টানতে তাঁদের নানা সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার কথা এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব রাজবালা বর্মা, শিল্প সচিব সুনীলকুমার বার্নোয়াল প্রমুখরা। তাঁদের দাবি, ২০ মাসে সেখানে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার লগ্নি বাস্তবায়িত হয়েছে। গত এক বছরে ১০টি নয়া নীতি তৈরি করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, বিশ্বব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রের যৌথ সমীক্ষায় সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠিতে ঝাড়খণ্ড গোটা দেশে তৃতীয়। আধুনিক শিল্প, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উপর জোর দিতেও কসুর করছে না ঝাড়খণ্ড। সে জন্য এক জানালা নীতি চালু করেছে তারা। অন্য সরকারি প্রক্রিয়ারও সরলীকরণ করা হয়েছে। আবার গাড়ির যন্ত্রাংশ ও সহযোগী শিল্পের প্রসারে আলাদা নীতি তৈরি করা হচ্ছে। কারণ জামশেদপুরে টাটা মোটরস-কে ঘিরে এই শিল্পের আরও প্রসারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন আমলারা।

রঘুবর জানিয়েছেন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা দিতেও তাঁরা রাজি। বেঙ্গালুরু সফরে ইনফোসিস-এর সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল তাঁদের। এখনই ইনফোসিস সে রাজ্যে বিনিয়োগ না করলেও স্টার্ট-আপের পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। জমির সমস্যাও নেই বলে দাবি ঝাড়খণ্ড সরকারের। কর্তারা জানান, সরকারের হাতে এক লক্ষ একর জমির ল্যান্ডব্যাঙ্ক রয়েছে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ের ‘রোড শো’-এ তথ্য প্রযুক্তি, স্টার্ট-আপ, ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র সংক্রান্ত একগুচ্ছ নীতি শিল্পমহলের কাছে প্রকাশ করবে তারা। বিদেশেও রাজ্যকে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও সম্ভবত চিনেও যাব আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন