অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নেমে পড়লেন ডাক্তার। সামনে ঘন জঙ্গল। গাড়ি যাওয়া অসম্ভব।
ডাক্তার যজ্ঞদত্ত রথ পায়ে হেঁটেই জঙ্গলে ঢুকে পড়লেন। আরও তিন কিলোমিটার পেরোতেই হবে তাঁকে। পেরোতে হবে নদী-পাহাড়। ওই জঙ্গলেরই এক কোণে পড়ে রয়েছেন সদ্য মা হওয়া এক তরুণী। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে যেতে দুর্গম পথের মাঝেই যিনি জন্ম দিয়েছেন কন্যাসন্তানের। কিন্তু কিছুতেই নাড়ি কাটা যাচ্ছে না।
নদী-পাহাড় ডিঙিয়ে এলেন ডাক্তার। নাড়ি কেটে কোলে তুলে নিলেন সদ্যোজাতকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে যথাসম্ভব সহজ পথ দিয়ে নদী পার করিয়ে মা-মেয়েকে এনে তুললেন অ্যাম্বুল্যান্সে। তার পর সোজা টুমুডিবন্ধা স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
ঘটনাটা গত রবিবারের। ওডিশার কন্ধমাল জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আজ মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তরুণী সীতাদাদু রায়তা। যে বালম গ্রামে তাঁর বাড়ি, সেখান থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সাত কিমি। যেতে গেলে পেরোতে হয় সাতটা নদী, পাহাড়-জঙ্গল। সীতার প্রসব হওয়ার পরে বাড়ির লোক দৌড়ন বিডিও-র দফতরে। তিনিই জরুরি বার্তা পাঠান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যজ্ঞদত্ত বলেন, ‘‘এমন অবস্থায় সাধারণত প্রচুর রক্তপাত হয়। সৌভাগ্যবশত সেটা হয়নি। মা ও শিশু এখন সুস্থ।’’
এই ওডিশাতেই অ্যাম্বুল্যান্সের পয়সা দিতে না পেরে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে ১০ কিমি পথ হেঁটেছিলেন দানা মাঝি। সেই রাজ্যেই এখন যজ্ঞদত্তকে বলা হচ্ছে ‘অন্য চিকিৎসকদের কাছে অনুপ্রেরণা’।