ফাইল চিত্র।
চিনে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলছেন শান্তির কথা। সেই সফর শেষ হতেই সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত দিচ্ছেন দু’মুখো যুদ্ধের বার্তা! আর আজ প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরতেই আরএসএসের সংগঠন জানিয়ে দিল, চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়ে দিল্লিতে সভা করবে তারা!
ডোকলামকে ঘিরে তৈরি হওয়া তিক্ততায় রেশ টেনে দু’দেশের প্রধানই যখন শান্তি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্র বাড়ানোর কথা বলছেন, তখন এমন বার্তায় অনেকেই বিস্মিত। কূটনীতিক মহলের বক্তব্য, মোদী-শি দু’জনেই যখন সম্পর্ক সামনে এগোনোর কথা বলছেন, তখন এ ধরনের মন্তব্য বা কর্মসূচি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। চিন সরকারের মুখপাত্র গেং সুহাং এ দিন ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘‘মাত্র দু’দিন আগে প্রেসিডেন্ট শি ও প্রধানমন্ত্রী মোদী হুমকির কথা বলেননি, দু’দেশের উন্নয়নের কথাই বলেছিলেন। ফলে সেনাপ্রধানকে কি এ কথা বলতে বলা হয়েছে, না এটা তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া না কি তিনি ভারত সরকারের অবস্থান বলছেন, তা জানা নেই।’’
রাওয়তের মন্তব্য ঘিরে অস্বস্তির মধ্যেই আরএসএসের ‘স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ’ আজ জানিয়ে দিল, চিনা সামগ্রী বয়কটের ডাক দিয়ে ২৯ অক্টোবর দিল্লির রামলীলা ময়দানে সভা করবে তারা। এই সভা ‘চিনা সামগ্রী’ বিরোধিতায় সীমাবদ্ধ না রেখে তার বার্তা যাতে আন্তর্জাতিক স্তরেও যায়, সে জন্য আমেরিকা, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফ্রিকার দেশগুলির রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদেরও ডাকা হচ্ছে। মঞ্চের নেতাদের বক্তব্য, চিনের নীতির খেসারত এই দেশগুলিকেও দিতে হচ্ছে। এনএসজি, মাসুদ আজহার বা ডোকলাম-নীতিরও বিরোধিতা হবে সভায়।
সঙ্ঘের এই সংগঠন কি মোদী সরকারের সমর্থন ছাড়াই এ ভাবে সভা করতে চাইছে?
স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ সূত্রের বক্তব্য, ঠিক এই বিষয়গুলি সম্প্রতি বৃন্দাবনে আরএসএস-বিজেপির সমন্বয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বিজেপির তরফে দলের সভাপতি অমিত শাহ ছিলেন। মঞ্চের দাবিপত্র সম্প্রতি মোদীকেও দেওয়া হয়েছে। মঞ্চের দাবি, রেডিওয় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে চিনা সামগ্রী বয়কটের কথা না বললেও দীপাবলিতে দেশের তৈরি সামগ্রী ব্যবহারের কথা বলে পরোক্ষে সেই বার্তাই দিয়েছেন।
মঞ্চের জাতীয় সংগঠন সচিব কাশ্মীরি লাল বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, দেশের উৎপাদন বাড়ানো। চিন থেকে সামগ্রী আসা বন্ধ হলে দেশের উৎপাদন দ্বিগুণ হবে। রোজগার বাড়বে। আর কোনও পথে প্রধানমন্ত্রী রোজগার বাড়াতে পারবেন না।’’