বিবেক ভোটের ডাকই এখন ভরসা মীরার

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় এসে বিধায়কদের ‘অন্তরের স্বর’ শোনার আবেদনই জানিয়েছেন মীরা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট তাঁর নিশ্চিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৫
Share:

মীরা কুমার। ফাইল চিত্র।

সেই ১৯৬৯ সালে ইন্দিরা গাঁধী বলেছিলেন কথাটা। কংগ্রেসের ‘সরকারি’ প্রার্থী’ নীলম সঞ্জীব রেড্ডির বিরুদ্ধে তদানীন্তন উপরাষ্ট্রপতি তথা নির্দল প্রার্থী ভি ভি গিরিকে ‘বিবেক ভোটে’ জেতানোর ডাক দিয়েছিলেন তিনি। প্রায় অর্ধশতাব্দী পরে সেই একই আবেদন শোনা যাচ্ছে রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেস-সহ ১৭ বিরোধী দলের প্রার্থী মীরা কুমারের গলায়। পাটিগণিতের বিচারে বিজেপি-র মনোনীত প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের বিরুদ্ধে মীরার জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কিন্তু মীরার বক্তব্য, তিনি বিশ্বাস রাখছেন সাংসদ ও বিধায়কদের ‘বিবেক ভোটে’।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় এসে বিধায়কদের ‘অন্তরের স্বর’ শোনার আবেদনই জানিয়েছেন মীরা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট তাঁর নিশ্চিত। তবু তৃণমূল, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এ দিন মীরা বোঝাতে চেয়েছেন, দলিত, অনগ্রসর মানুষের জন্য তিনি জীবনভর লড়াই করেছেন। এমন এক শক্তি এখন দেশে ক্ষমতায় রয়েছে, যারা ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতির যাবতীয় পরম্পরাকে তছনছ করছে। এই পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধিরা যেন তাঁদের ‘অন্তরের স্বর’ শুনেই ভোট দেন। দেশের সব সাংসদ ও বিধায়ককে চিঠি পাঠিয়েও ‘বিবেক ভোটে’র আর্জি জানিয়েছেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার।

পরে মীরার কাছে প্রশ্ন ছিল, বিজেপি প্রার্থীর তুলনায় তাঁর পক্ষে সংখ্যা অনেক কম। তিনি কীসের জোরে লড়াই করছেন? মীরা বলেন, ‘‘আমি বিবেকের কাছে আবেদন করছি। এটা ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির লড়াই নয়। আদর্শের লড়াই। এই লড়াইয়ে শুধু সংখ্যা গুনছি না।’’

Advertisement

হায়দরাবাদ থেকে ভুবনেশ্বরের উড়ান ধরতে না পারায় সোমবার রাতেই কলকাতা পৌঁছে গিয়েছিলেন মীরা। বিধানসভায় গিয়ে এ দিন দুপুরে প্রথমে বাম এবং তার পরে কংগ্রেস বিধায়কদের মুখোমুখি হন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পবন বনসল, এআইসিসি-র তরফে রাজ্যের পর্যবেক্ষক সি পি জোশী, ত্রিপুরার কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা বীরজিৎ সিংহ এবং মীরার পুত্র অংশুল অভিজিৎ।

সাংবাদিক সম্মেলনে যাওয়ার আগে নৌসর আলি কক্ষে তৃণমূল পরিষদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক করেন মীরা। সেখানে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না। তবে মীরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগে চেষ্টা করেছেন জেনে সোমবার রাতে বিমানবন্দরে নেমেই তিনি ফোনে কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তৃণমূল নেত্রীর ‘লড়াকু’ মেজাজের প্রশংসাও করেন মীরা। তবে সাংবাদিক সম্মেলনে মীরার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ ছিলেন না। বিরোধী দলনেতা
আব্দুল মান্নান যে ভাবে শাল, শাড়ি, বই দিয়ে মীরাকে আপ্যায়ন
করেছেন, তৃণমূলের তরফে তেমন কিছু হয়নি।

দেশের তৎকালীন ১৭টি রাজ্যের মধ্যে ১১টি থেকেই ‘বিবেক ভোটে’র জেরে জয় পেয়েছিলেন গিরি। যদিও কংগ্রেস তখন ১২টি রাজ্যে ক্ষমতায়! প্রশ্ন থাকছে, ‘বিবেক ভোট’ চেয়ে গিরির মতো মীরাও কি সফল হবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন