মনিপুরে গোষ্ঠীহিংসায় ২৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৫০,০০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।
মণিপুরে সংঘর্ষের মূলে কুকিরাই! এমনটাই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে সংঘর্ষবিরতি বাতিল করার আবেদন জানাল মেইতেই গোষ্ঠীগুলি।
অভিযোগ, কুকি জনজাতির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে মণিপুরের জাতিগত সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত ‘সংঘর্ষ স্থগিতাদেশ’ চুক্তি (এসওও) বাতিল করতে চাওয়ার নেপথ্যে এমনটাই কারণ দেখিয়েছে মেইতেই গোষ্ঠীগুলি। এই পরিস্থিতিতে জল্পনা দানা বেঁধেছে, বিতর্কিত ওই চুক্তির বিষয়ে শীঘ্রই কেন্দ্রের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে নতুন কোনও ঘোষণা করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষবিরতি সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনেই সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করেছিল মনিপুর বিধানসভা, যাতে কেন্দ্রকে ওই চুক্তি বাতিল করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তার পর থেকে বার বার একই দাবিতে সরব হয়েছে মেইতেই গোষ্ঠীগুলি। ‘মেইতেই অ্যালায়েন্স’ একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘গত ৩ মে, ২০২৩ থেকে মনিপুরে হিংসায় উস্কানি দিয়ে এসেছে কুকি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি। তারা নিজেদের স্বার্থান্বেষী উদ্দেশ্য সফল করতে এসওও চুক্তিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছে। ২০০৮ সালে এই চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর থেকেই এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি মনিপুরে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। তারা এসওও-য় উল্লিখিত নির্দেশাবলী বার বার লঙ্ঘন করেছে, যা সন্ত্রাসবাদের সমান।’’
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মনিপুর পুলিশ প্রথম বারের মতো গোষ্ঠীহিংসায় কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘কুকি লিবারেশন আর্মি’ (কেএলএ), ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (পাম্বেই) এবং মেইতেই বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউএনএলএফ (পি)-র জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এই গোষ্ঠীগুলিই কেন্দ্র ও রাজ্যের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে নিজ শিবিরে থাকতে হবে এবং সমস্ত অস্ত্র গুদামে বন্ধ রাখতে হবে। অথচ সেই চুক্তি আদৌ মানা হয়নি বলে অভিযোগ। গত দেড় বছরে মনিপুরে গোষ্ঠীহিংসায় ২৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৫০,০০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।