খোদ শ্রম মন্ত্রী গিয়ে তোলা চাওয়ায় হিরের ব্যবসাই বন্ধ করে দিলেন গুজরাতি ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল বিহারের রাজধানী পটনার পাটলিপুত্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া।
সম্প্রতি ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল এরিয়ার একটি হিরে প্রসেসিং ও কাটিংয় সংস্থায় হাজির হন শ্রম মন্ত্রী, আরজেডির বিজয়প্রকাশ যাদব। সেখান তিনি কর্মীদের বলেন, ‘সারপ্রাইজ ভিজিটে’ এসেছেন। এরপরেই মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন মন্ত্রীর অনুগামীরা। টাকা না পেলে ওই ব্যবসায়ীকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়।
মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই ওই ব্যবসায়ীর দফতর থেকে ফোনে গোটা ঘটনার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জানানো হয়। সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোন করে ওই মন্ত্রীকে কারখানা থেকে চলে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সাঙ্গোপাঙ্গো নিয়ে মন্ত্রী তখনকার মতো চলে এলেও পরে বারবার ফোন করে তোলা চাওয়া হয়। না হলে ‘শ্রম আইন লঙ্ঘন’-এর মামলা করে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
বার বার ফোন পাওয়ায় আর পটনায় অপেক্ষা করেননি গুজরাতের সুরাতের শ্রীনুজ অ্যান্ড কোম্পানি। প্রায় দেড়শো লোকের পটনা ইউনিটটি বন্ধ করে দিয়েছে তাঁরা। গোটা ব্যবসা গুটিয়ে সুরাতেই ফিরে গিয়েছে। সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বিশাল দোশি অবশ্য এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কিছু বলতে চাননি। যা বলার তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
তাঁরই মন্ত্রিসভার এক সদস্যের বিরুদ্ধে এ ভাবে তোলাবাজির অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি কোনও ভাবেই নষ্ট হতে দেবেন না। বিষয়টি নিয়ে আরজেডি সভাপতি লালুপ্রসাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ওই সংস্থার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সে সময়ে লালুপ্রসাদকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা বলেন বিহারে সূঁচের কারখানা হওয়াও অসম্ভব, তাঁরা দেখতে পারেন বিখ্যাত হিরে ব্যবসায়ীরাও বিহারে কারখানা খুলছেন।’’ সেই কারখানা এ ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহলে নিজের ক্ষোভ গোপন রাখেননি।
অভিযুক্ত মন্ত্রী বিজয়প্রকাশ যাদব অবশ্য এই প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি।