রাজ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ টানার রূপরেখা তৈরি হয়েছে তাঁর হাতেই। ভোটের সময় নিজেই নিজের সম্পত্তি ঘোষণা করেছেন কুড়ি কোটি টাকার বেশি। অরুণ জেটলি কানপুরে গেলে হোটেল ছেড়ে তাঁর বাড়িতেই ওঠেন। যোগী আদিত্যনাথের আগে তাঁর নামও ঘোরাফেরা করছিল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে।
তিনি সতীশ মহানা। উত্তরপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রী। মোদীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এ কিন্তু তিনি গরিবের তালিকায়। শুধু ‘কোটিপতি’ সতীশ মহানাই নন, তাঁর স্ত্রী-সহ পরিবারের ছ’জন সদস্যের নাম উঠে এসেছে গরিবের তালিকায়। বিজেপির আর এক বিধায়ক সলিল বিশনোই-ও তালিকায় রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, শহরের আরও কিছু কোটিপতির নামও জ্বলজ্বল করছে।
দেশের দশ কোটি গরিব পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে চিকিৎসা বাবদ পাইয়ে দিয়ে ভোট বৈতরণী পার করতে চান প্রধানমন্ত্রী। তার জন্য আমলাদের মাঠে নামিয়ে তালিকা তৈরি করেছেন দু’মাস ধরে। ঘটা করে প্রকল্প চালুও করেছেন। পর্যাপ্ত টাকা বরাদ্দ হয়নি, কিন্তু রোজ ঢালাও প্রচার হচ্ছে— কোন পরিবারের কোন সদস্য কোন প্রান্তে এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। সেখানে মহানা-র মতো বিত্তবানেরা তালিকায় কেন?
বিষয়টি আজ জানাজানি হতে খবর পৌঁছয় প্রধানমন্ত্রী দফতরে। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, দিল্লি থেকে ফোন যায় যোগীর কাছেও। যোগীও তৎক্ষণাৎ ফোন করেন নিজের মন্ত্রীকে। মন্ত্রী জানান, আগেই জেলাশাসককে ফোন করে তালিকা শোধরানোর কথা বলেছেন তিনি। মহানা আজ নিজে বলেন, ‘‘যখনই শুনেছি, আমার ও আমার পরিবারের নাম এই প্রকল্পে শামিল করা
হয়েছে, তখনই জেলাশাসককে ফোন করে পদক্ষেপ করতে বলি।
কংগ্রেসের এক প্রাক্তন বিধায়ক ও বিজেপির বর্তমান বিধায়কের নামও এই প্রকল্পে আছে। গোটা ঘটনার
তদন্ত হবে।’’
তবে কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদীর আরও ডজনখানেক ‘জুমলা’র মতোই ‘মোদী-কেয়ার’ও আর
একটি। ক’দিন আগেই নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধে রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘রাফালে অনিল অম্বানীর পকেটে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যার ফলে ব্যক্তি পিছু মাত্র ৪০
টাকা বরাদ্দ।’’
আজ কংগ্রেসের নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘একে তো গরিবদের জন্য টাকা বরাদ্দ না করে ঢাক পেটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তার উপর এত কাণ্ড করে গরিবদের বদলে ধনীদেরই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যে ভাবে অন্য ক্ষেত্রেও শুধু পছন্দের বড় শিল্পপতিদের ফায়দা দেন।’’