অযোধ্যা ছাড়তে চান সংখ্যালঘুরা

অযোধ্যায় রামমন্দির মামলার শুনানি কবে থেকে, তা জানুয়ারির আগে জানাবে না সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

অযোধ্যায় রামমন্দির মামলার শুনানি কবে থেকে, তা জানুয়ারির আগে জানাবে না সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তার অপেক্ষায় না থেকে লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই অযোধ্যাকে ঘিরে আসরে নেমেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। ২৫ নভেম্বর অযোধ্যায় রামমন্দির নিয়ে জোড়়া বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করেছে তারা। ওই দিন গেরুয়া-বাহিনী গন্ডগোল করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছেন স্থানীয় সংখ্যালঘুদের একাংশের। তাঁদের অনেকেই ওই দিনের আগেই অযোধ্যা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে চাইছেন।

Advertisement

অযোধ্যার সংখ্যালঘুদের মধ্যে এমন আতঙ্কের বাতাবরণ নিয়ে অবশ্য হেলদোল নেই উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের। সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার শুনানির দিন ঘোষণা পিছিয়ে যাওয়ার পরেই দেশের বৃহত্তম রাজ্যে হিন্দুত্বের হাওয়া তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ফৈজাবাদের নাম বদলে অযোধ্যা করেছেন যোগী। ঘোষণা করেছেন, অযোধ্যায় সরযূর তীরে রামের বিরাট মূর্তি তৈরি করা হবে। এ সবের মধ্যেই ২৫ নভেম্বর অযোধ্যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বড় সভা করার কথা জানিয়েছে। ওই একই দিনে শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরেও অযোধ্যায় সভা করবেন।

ওই জোড়া সভা নিয়েই আশঙ্কা ঘনাচ্ছে। বাবরি মসজিদ মামলার মুখ্য অভিযোগকারী ইকবাল আনসারির অভিযোগ, ‘‘১৯৯২ সালে আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তখন যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছিল, ২৫ নভেম্বর সেই পরিস্থিতি ফিরে আসতে চলেছে। হয় আমাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে হবে সরকারকে। না হলে আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। আর কোনও রাস্তা নেই।’’

Advertisement

নিরাপত্তা? কে দেবে কাকে! উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সরাসরিই বলেছেন, ‘‘সাধুসন্তরা যদি রামের নামে এককাট্টা হতে চান, তাতে আপত্তির কী রয়েছে? আমরা ওঁদের সম্পূর্ণ সমর্থন করছি।’’ আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অলক কুমারের বক্তব্য, যে সব সাংসদ তাঁদের সমাবেশে সহযোগিতা করবেন না, তাঁদের ঘেরাও করা হবে।

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেছেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি রাজ্যের হাতে। অথচ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অযোধ্যা ত্যাগ করতে হচ্ছে!’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, ‘‘যখনই কোনও নির্বাচন আসে, বিজেপি রামমন্দিরের ধুয়ো তুলে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের খেলা খেলে। ওদের হাতে আর কিছু নেই প্রচার করার। তাই হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে এককাট্টা করার জন্য এই কৌশল।’’

সম্প্রতি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘বিজেপির বিশ্বাস, রাম জন্মভূমিতেই রামমন্দির গড়তে হবে। সাংবিধানিক পথেই রামমন্দির গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ এর পর সঙ্ঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ স্থির করে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর মুখে ২৫ নভেম্বর থেকে অযোধ্যায় এবং তার পর বেঙ্গালুরু, নাগপুর এবং দিল্লিতে পর পর সভা করা হবে। আগামী ৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে সভা হবে রামলীলা ময়দানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন