Coronavirus

টিকার আশ্বাস, ঘোষণা স্বাস্থ্য কার্ডের

করোনায় প্রতিষেধক প্রসঙ্গে মোদী বলেন, অন্তত তিনটি প্রতিষেধক এই মুহূর্তে বাজারে আসার দৌড়ে রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২০ ০৪:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাস দেড়েক আগে শোনা গিয়েছিল, স্বাধীনতা দিবসে করোনার প্রতিষেধকের কথা ঘোষণা করে চমকে দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই টিকার পরীক্ষা-পর্বই এখনও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় আজ আমজনতার জন্য জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশন ঘোষণা করে চমক দিলেন প্রধানমন্ত্রী। জানালেন, নতুন ওই ব্যবস্থায় প্রত্যেক দেশবাসীর জন্য একটি স্বাস্থ্য কার্ড তৈরি হবে। যাতে সেই ব্যক্তির যাবতীয় চিকিৎসার বিবরণ ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকবে। কবে থেকে ওই প্রকল্প শুরু হবে, সে নিয়ে অবশ্য স্পষ্ট কিছু জানায়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

Advertisement

আর করোনায় প্রতিষেধক প্রসঙ্গে মোদী বলেন, অন্তত তিনটি প্রতিষেধক এই মুহূর্তে বাজারে আসার দৌড়ে রয়েছে। বাজারে এলেই তা কম সময়ের মধ্যে কী ভাবে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে, সেই রূপরেখা তৈরি বলেও দাবি মোদীর।

সূত্রের মতে, ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশনের সঙ্গে ভবিষ্যতে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পকে জুড়ে দেশের ১৩০ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবার তলায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশনের ঘোষণা করে মোদী বলেন, এই ব্যবস্থায় দেশের প্রতিটি নাগরিক একটি করে স্বাস্থ্য পরিচয়পত্র পাবেন। যাতে সেই ব্যক্তির রোগের যাবতীয় ইতিহাস লেখা থাকবে। কোনও চিকিৎসক কোন রোগের চিকিৎসা করেছেন, কী ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন, তা সব ডিজিটালি লেখা থাকবে। যাতে পরবর্তী ধাপে চিকিৎসা শুরু করা যায়। এর জন্য দেশবাসীকে স্বাস্থ্য কার্ড বানাতে হবে। আধারের অভিজ্ঞতার পরে মোদী সরকার জানিয়েছে, এই কার্ড বাধ্যতামূলক করা হবে না। শিশুদের জন্মের সময়েই ওই কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে। ওই ডিজিটাল আইডি দেশের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল নিতে বাধ্য থাকবে। পরবর্তী ধাপে ওই কার্ডের মাধ্যমে ই-ফার্মেসি ও টেলিমেডিসিন পরিষেবা দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে প্রকল্পটির জন্য ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থ মন্ত্রক। যদিও প্রকল্পটি গোটা দেশে সুষ্ঠু ভাবে শুরু করতে অন্তত হাজার কোটি টাকা লাগবে বলেই মত জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশন আজ প্রচারের যাবতীয় আলো কেড়ে নিলেও সকলেই কান খাড়া করে ছিলেন, প্রতিষেধক প্রশ্নে মোদী কী বলেন, তা শোনার জন্য। কেন না, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল

রিসার্চ (আইসিএমআর) মাস দেড়েক আগে তাদের একটি চিঠিতে ইঙ্গিত দিয়েছিল, স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী প্রতিষেধক আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করতে পারেন। আজ অবশ্য প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি দেশবাসীকে বলতে চাই যে, বর্তমানে দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে তিনটি প্রতিষেধকের পরীক্ষা চলছে। বিজ্ঞানীদের সবুজ সঙ্কেত পেলেই সরকার সেই প্রতিষেধকের উৎপাদনে নেমে পড়বে। তার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। প্রতিষেধকের উৎপাদন বৃদ্ধি কী ভাবে করা সম্ভব হবে এবং তা কী ভাবে কম সময়ে প্রতিটি ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে, সেই রূপরেখাও সরকার তৈরি করে রেখেছে।’’

স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, তিনটির মধ্যে দু’টি প্রতিষেধক ভারতে তৈরির কাজ চলছে। সেগুলি হল ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ ও জাইডাস ক্যাডিলার ‘জাইকড ডি’। দু’টি টিকারই মানবদেহে প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল ভাবে শেষ হয়েছে। কোনও নেতিবাচক প্রভাব এখনও দেখা যায়নি। আগামী মাস থেকে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হবে। অন্য দিকে, তৃতীয় ধাপে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি টিকা। যাদের সঙ্গে উৎপাদনের প্রশ্নে হাত মিলিয়েছে ভারতীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট। মানব শরীরে অক্সফোর্ডের টিকার কোনও নেতিবাচক রিপোর্ট আসেনি। ফলে এ বছরের শেষেই ওই টিকা ভারতের বাজারে চলে আসবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন