ইতনি ডরি কিঁউ হো রে! ঘুরেফিরে মোদীর নিশানায় মমতাই

দিল্লির রামলীলা ময়দানে বক্তৃতার দেড় ঘণ্টার মাথায় তিনি উচ্চারণ করেন ‘দিদি’ শব্দটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২৩
Share:

নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘‘দিদি (বিরতি)... মমতাদিদি (বিরতি)। মমতা দিদি সিধি (বিরতি)... কলকাতা থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন!’’

Advertisement

ক’দিন ধরেই নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রশ্নে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ছিল নরেন্দ্র মোদীর পালা। দিল্লির রামলীলা ময়দানে বক্তৃতার দেড় ঘণ্টার মাথায় তিনি উচ্চারণ করেন ‘দিদি’ শব্দটি। বলেই বেশ অনেক ক্ষণের একটি পরিকল্পিত বিরতি। এর পরে গলার আওয়াজ কখনও খাদে নামিয়ে কখনও চড়ায় তুলে দিদির উদ্দেশে মোদীর প্রশ্ন, ‘‘ইতনি ডরি কিঁউ হো রে!’’

তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘সবাইকে ছেড়ে মোদী নিশানা করছেন মমতাকে। কে কাকে ভয় পাচ্ছে, এ থেকেই স্পষ্ট!’’

Advertisement

সংসদে সিএবি আসার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে সরব ছিলেন মমতা। অসম ও উত্তর-পূর্বের পরে প্রথম যে রাজ্যে মানুষ পথে নামেন, তা পশ্চিমবঙ্গ। মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, ওই আইন তিনি বাংলায় বলবৎ হতে দেবেন না। এর পরে নিজেদের রাজ্যে ওই আইন প্রয়োগ হতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন কেরল, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাব ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রীরা। স্বভাবতই আজ মোদীর নিশানা ছিলেন মমতা। মোদী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের রোখা ও শরণার্থীদের সাহায্য করার দাবিতে মমতাদিদি এক দিন স্পিকারকে
কাগজ ছুড়েছিলেন।’’ তার পরে কৌতুকের সুরে প্রশ্ন, ‘‘কেন বদলে গেলেন আপনি?’’

মোদীর দাবি, মমতার যাবতীয় বিরোধিতা আসলে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতা আসে, যায়। কেন এত ভয় পাচ্ছেন? বাংলার জনতাকে কেন দুশমন ভেবে নিয়েছেন?’’ পাল্টা জবাবে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘জনতা কাকে দুশমন ভেবেছে, তা ভোট এলেই বুঝবেন মোদী।’’ মমতার এনআরসি-বিরোধিতাকে মুসলিমদের সমর্থন কুড়োনোর চেষ্টা বলে অভিহিত করেছে রাজ্য বিজেপি। মোদী আজ সেই সুরেই বলেন, ‘‘আপনি কার বিরোধ আর কার সমর্থনের জন্য এটা করছেন, গোটা দেশ দেখছে!’’

দিন কয়েক আগে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো সংস্থার পর্যবেক্ষণে গণভোটের দাবি তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আজ তা নিয়েও ‘দিদি’-র সঙ্গে ‘সিধি’ (সোজা) শব্দটি জুড়ে মোদীর বক্তব্য, ‘‘দিদি সিধি কলকাতা থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন!’’ এ দিন টুইটারে মমতা বলেন, ‘আমি যা বলেছি মানুষের সামনেই বলেছি। দেশে এনআরসির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীই বরং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উল্টো কথা বলছেন। দেশকে কে বিভাজন করছে? কে ঠিক, কে ভুল মানুষ ঠিকই বিবেচনা করবেন। সিএএ মানছি না, এনআরসি মানছি না।’

মমতা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যে কেন্দ্রীয় আইনের প্রয়োগ রুখতে পারেন না, তা একাধিক বার বলেছেন কেন্দ্রের আমলারা। আজ মোদীও বলেন, ‘‘অনেক মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘আমাদের রাজ্যে সিএএ করতে দেব না।’ মুখ্যমন্ত্রীরা নির্বাচনে জিতে সংবিধান ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন। তিরঙ্গা ঝান্ডার নীচে দাঁড়িয়ে আপনারা এমন কথা বলতে পারেন?’’ মোদীর পরামর্শ, ‘‘আইন জানেন এমন কেউ বা অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলুন, তা হলে আর এ ভাবে বেইজ্জত হতে হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন