ঘোষিত গোরক্ষকদের তাণ্ডব হোক বা সংখ্যালঘু ও দলিতদের উপর হামলা— অধিকাংশ সময়ই নীরব থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও বা নিন্দা করেছেন, তা-ও ঘটনা ঘটে যাওয়ার অনেক পরে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়! তাই বুধবার লখনউয়ের রাস্তায় শুকনো ফল বিক্রেতা দুই কাশ্মীরির উপর হামলা নিয়ে সরব হলেন মোদী। রাজ্যগুলির কাছে তাঁর আবেদন, ‘কাশ্মীরি ভাইদের’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পেতে পারে, সেই আশঙ্কায় আজ সবক’টি রাজ্যকে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি নাশকতার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরিদের উপর হামলার অভিযোগ উঠছে। হিন্দু দলের চার সদস্য বুধবার লখনউয়ের ডালিগঞ্জে দুই কাশ্মীরি ফল বিক্রেতাকে মারধর করে। তাঁদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে, আধার কার্ডও দেখতে চেয়েছিল হামলাকারীরা। ওই হেনস্থার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করে কানপুরের এক অনুষ্ঠানে আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত কাল কিছু পাগল লোক লখনউয়ে কাশ্মীরি ভাইদের মারধর করেছে। এই মুহূর্তে দেশে ঐক্যের বাতাবরণ বজায় রাখা খুব জরুরি। দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তাঁরা যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেন।’’
কাশ্মীরিদের উপরে হামলার ঘটনাগুলি নিয়ে সরকার যে উদ্বিগ্ন সেই বার্তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেই মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাজস্থানে একটি জনসভায় রাজনাথ বলেন, ‘‘দেশের কয়েকটি প্রান্তে কাশ্মীরি ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই, কাশ্মীরিরা আমাদের লোক ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তাঁরা এ দেশেরই বাসিন্দা।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে কাশ্মীরিদের উপরে এ ধরনের হামলার ঘটনা বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে সতর্ক করেছে। সরকার যে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, তা বোঝাতে ময়দানে নেমে পড়েছেন জেটলিও। লখনউয়ে কাশ্মীরিদের নিগ্রহ নিয়ে তাঁর টুইট, ‘‘নিন্দাযোগ্য ঘটনা। আমাদের লড়াই জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে। সেই লড়াইতে আমাদের জম্মু-কাশ্মীরের লোকেদের সমর্থন প্রয়োজন।’’