Narendra Modi

দক্ষতায় জোর মোদীর, প্রশ্ন উঠছে কাজ কই

বুধবার বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসে ভিডিয়ো-বক্তৃতায় মোদী বলেন, বিদ্যুৎ গতিতে পাল্টে যাওয়া প্রযুক্তির কারণে কাজের জগৎ এমনিতেই বদলাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০৩:৫২
Share:

ছবি: পিটিআই।

কাঠের কাজ হোক বা কম্পিউটার-কোডিং। জাহাজ চালানো হোক বা গাড়ি সারাই। দুনিয়া জয়ের জন্য নিজের কাজের জগতে প্রতিদিন দক্ষতা বৃদ্ধির মন্ত্র দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের প্রশ্ন, দক্ষতা বৃদ্ধির নিদান দিলেও তা ব্যবহারের মতো কাজের সুযোগ তৈরির কথা মোদী বললেন কোথায়?

Advertisement

এক ধাপ এগিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কার উদাহরণ টানলেন কেউ কেউ। চড়া বেকারত্বে নিমজ্জিত আমেরিকায় নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে নতুন কাজ খুঁজে নেওয়ার ডাক দিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে যিনি।

বুধবার বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসে ভিডিয়ো-বক্তৃতায় মোদী বলেন, বিদ্যুৎ গতিতে পাল্টে যাওয়া প্রযুক্তির কারণে কাজের জগৎ এমনিতেই বদলাচ্ছে। তার উপরে কর্ম সংস্কৃতি এবং কাজের ধরনকে এক ঝটকায় আমূল বদলে দিয়ে যাচ্ছে করোনা। এই পরিস্থিতিতে নিজের কাজে প্রাসঙ্গিক থাকার একমাত্র উপায় দক্ষতা অর্জন, প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষতা বাড়ানো এবং দীর্ঘমেয়াদে আরও নতুন দক্ষতায় হাত পাকানো। প্রয়োজন, পুঁথিগত জ্ঞানের পাশাপাশি হাতে-কলমে নিখুঁত কাজ করার দক্ষতা। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, নতুন দক্ষতায় হাতেখড়ি না-হলে, কাজের বাজারে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা যেমন বাড়ে, তেমনই নতুন চ্যালেঞ্জের অভাবে থমকে যায় জীবনও।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্যানিটাইজ়ারে চড়া কর, কেন্দ্রের মতে যুক্তি আছে

আরও পড়ুন: করোনার টিকা হয়ে উঠবে কি জাইকোভ-ডি? পরীক্ষা শুরু ভারতে​

কিন্তু বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, কমবয়সিদের নিজের কাজে দক্ষ হতে প্রধানমন্ত্রীর এই ডাক স্বাগত। চাকরি-বাজারের গলা কাটা প্রতিযোগিতায় তা জরুরিও। কিন্তু দক্ষতার পাঠ নিয়ে তা কোথায় কাজে লাগাবেন এ দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ? করোনার কামড়ের আগেই ঝিমিয়ে ছিল অর্থনীতি। অতিমারির আক্রমণে তা কার্যত শয্যাশায়ী। চাহিদায় ভাটার কারণে মুষড়ে আছে কাজের বাজারও। এই ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি আর মুষড়ে থাকা কাজের বাজারকে

দ্রুত চাঙ্গা করার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রী দিলেন কোথায়? নাকি চাকরির আশা ছেড়ে সকলকেই ‘আত্মনির্ভর’ হতে বলছেন তিনি? নিজের ব্যবসা শুরু করা এই পরিস্থিতিতে সম্ভব কত জনের পক্ষে?

এই প্রসঙ্গেই উঠেছে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে সম্প্রতি ‘নতুন কিছু খুঁজুন’ প্রকল্পের প্রচারে নেমেছেন ইভাঙ্কা। যে বিজ্ঞাপনের মূল বক্তব্য, নতুন ভাবে দক্ষতা অর্জন করে নতুন উদ্যমে কাজের খোঁজে ঝাঁপান। প্রয়োজনে নিজেই তৈরি করুন কাজের সুযোগ। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, “আমেরিকায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে ঝড়ের বেগে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১.৩ লক্ষ। শুধু এপ্রিলেই কাজ হারিয়েছেন ২ কোটির বেশি মানুষ। আর এই পরিস্থিতিতে নতুন দক্ষতা অর্জনের কথা বলছেন ইভাঙ্কা! হোয়াইট হাউসের কি তবে কোনও দায় নেই? যা করার করবেন কোণঠাসা সাধারণ মানুষেই?”

মোদীর দিকেও কিছুটা সেই সমালোচনার তিরই ছুড়েছেন বিরোধীরা। যদিও প্রধানমন্ত্রীর দাবি, দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গোড়া থেকেই কৌশল বিকাশ কেন্দ্র তৈরিতে, আইটিআইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে তাঁর সরকার। ভারতে কোন কাজে কে দক্ষ, বিশ্বের কোনখানে কদর কী ধরনের দক্ষ কর্মীর— এই সব কিছুর তথ্য-ভাণ্ডার তৈরি করা হচ্ছে বলেও তাঁর দাবি। একই সুরে অমিত শাহেরও দাবি, মোদী বরাবরই কাজ খোঁজার চেয়ে কাজ তৈরিতে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন