কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কারনান —ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে টানাপড়েনে এ বার শীর্ষ আদালতের রায়কেই অস্ত্র করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে শেষ কথা বলার অধিকার কার কাছে থাকবে, তা নিয়ে ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে কেন্দ্রের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের টানাপড়েন অব্যাহত। এ বার কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সি এস কারনানের মামলায় শীর্ষ আদালতের রায়কেই অস্ত্র করেছে মোদী সরকার। বিচারপতি কারনানকে জেলে পোরার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি জে চেলামেশ্বর ও বিচারপতি রঞ্জন গগৈ মন্তব্য করেছিলেন, এই মামলায় স্পষ্ট যে বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বিচারপতিদের আচার-আচরণ সংশোধনের দরকার হলে ইমপিচমেন্ট ছাড়াও অন্য কোনও আইনি ব্যবস্থা তৈরি করা যায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই রায়ের উল্লেখ করেই এ বার কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছে, কলেজিয়াম এর পর নিজের অবস্থান বদলাবে কি না। বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের দেওয়া বিভিন্ন শর্তগুলি কলেজিয়াম ফের খতিয়ে দেখবে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
প্রাক্তন বিচারপতি কারনানের গ্রেফতারির রায়ের পরেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন রয়েছে।’’ আইন মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, কলেজিয়ামের মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগ নিখুঁত হলে কারনানের মতো ব্যক্তি কোনওদিনই হাইকোর্টের বিচারপতি হতে পারতেন না। সেই মতই এ বার চিঠি লিখে সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয়েছে।
নতুন প্রক্রিয়া তৈরির ক্ষেত্রে কেন্দ্র চাইছে, শেষ কথা বলার অধিকার নিজের কাছে রাখতে। কেন্দ্রের দাবি, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে কলেজিয়ামের সুপারিশ করা কোনও নাম কেন্দ্র জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে খারিজ করে দিতে পারে। কিন্তু কলেজিয়াম তা মানতে রাজি নয়। কলেজিয়ামের যুক্তি, এই ধরনের কোনও আপত্তি তুললে তাঁরা অবশ্যই সেই নাম নিয়ে চাপাচাপি করবেন না। কিন্তু কেন্দ্র কাগজে-কলমে বিষয়টির পাকাপাকি সমাধান করে রাখতে চায়।