Modi Government

কত ক্ষতি চাষির, জানেই না কেন্দ্র!

মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স, আদানি-সহ বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলিকে সুবিধা করে দিতে গিয়ে মোদী সরকার ছোট-মাঝারি চাষি, আমজনতাকে বিপদেঠেলে দিচ্ছে কি না, মঙ্গলবার সেই প্রশ্নও বার বার উঠল লোকসভায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

লকডাউনের সময়ে মরিয়া হয়ে বাড়ির পথ ধরা কত জন পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তাতেই মারা গিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সরকারি তথ্য না-থাকার কথা সোমবারই সংসদে কবুল করেছে কেন্দ্র। করোনা-কালে চাষিদের ক্ষতি কতখানি, এ বার সেই পরিসংখ্যানও হাতে নেই বলে মঙ্গলবার স্বীকার করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স, আদানি-সহ বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলিকে সুবিধা করে দিতে গিয়ে মোদী সরকার ছোট-মাঝারি চাষি, আমজনতাকে বিপদেঠেলে দিচ্ছে কি না, মঙ্গলবার সেই প্রশ্নও বার বার উঠল লোকসভায়। অত্যাবশ্যক পণ্য(সংশোধনী) বিল সংক্রান্ত আলোচনায় বিরোধীদের পাশাপাশি এ বিষয়ে সরকারকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন একাধিক শরিক দলের সাংসদও। শেষমেশ বিল পাশ হলেও আগাগোড়া অভিযোগ উঠেছে, তার মাধ্যমে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করার। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।

সম্প্রতি কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কারের জন্য জারি তিন অধ্যাদেশকে আইনের রূপ দিতে সংসদে তিনটি বিল এনেছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিপুল সংখ্যক চাষি যখন পথে নেমেছেন, তখন সংসদেও কৃষি সংক্রান্ত আলোচনায় কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্র। কোভিডের কামড় এবং লকডাউনের জেরে চাষি এবং কৃষি ক্ষেত্রের কতখানি লোকসান হয়েছে, তার হিসেব চেয়ে লিখিত প্রশ্ন করা হয়েছিল কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরকে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনায় চাষিদের আয় কতটা ধাক্কা খেয়েছে, তার হিসেব সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট তাঁদের কাছে নেই। বিরোধীদের প্রশ্ন, যে সরকারের প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’, তাদের কাছে করোনায় চাষিদের রোজগার মার খাওয়ার হিসেব নেই কেন?

Advertisement

আরও পড়ুন: স্ত্রী করোনা পজিটিভ হয়ে আইডিতে, কোয়রান্টিনে সূর্যকান্ত মিশ্র

আরও পড়ুন: ৫০ লক্ষে ভারত, তবু লকডাউনের গুণগান​

লোকসভায় অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) বিল সংক্রান্ত আলোচনাতেও কৃষি নিয়ে কটাক্ষের মুখে পড়েছে সরকার। তৃণমূলের সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী-সহ প্রায় পুরো বিরোধী শিবিরের অভিযোগ— এই সংশোধনীর মাধ্যমে খাদ্যপণ্যের মতো অত্যাবশ্যক সামগ্রী যথেচ্ছ মজুত করার রাস্তা খুলে দিতে চাইছে কেন্দ্র। যাতে সেই সুযোগে সস্তায় বিপুল পরিমাণে আনাজ, ফল ইত্যাদি কিনে তা নিজেদের কোল্ড স্টোরেজে মজুত করে রাখতে পারে রিলায়্যান্স, আদানির মতো বড় গোষ্ঠী। এবং পরে চড়া দামে বেচে মোটা মুনাফা করতে পারে তারা। এই সংশোধনী ঠেকাতে তাঁরা আদালতের যাবেন বলে জানিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ।

বিলে বলা হয়েছে, অত্যাবশ্যক হিসেবে চিহ্নিত খাদ্যপণ্যের দাম নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি (কোনও ক্ষেত্রে ৫০%, কোথাও ১০০%) বাড়লে, তবেই হস্তক্ষেপ করবে কেন্দ্র। কল্যাণের দাবি, এতে মজুতদারি মাথাচাড়া দেবে। মুনাফা হবে ফড়েদের। সৌগতের প্রশ্ন, দর দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত সরকার হাত গুটিয়ে থাকবে, এই সিদ্ধান্ত কার স্বার্থে নেওয়া? যুদ্ধ, ভয়াল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ক্ষেত্রে মজুতদারিতে ফের রাশ টানার রাস্তা খোলা রাখা হলেও বিরোধীদের অভিযোগ, ঠিক কোন ক্ষেত্রে সরকার তা করবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বিলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন