বিপ্লব দেব। ফাইল চিত্র।
তিনি মুখ খুললেই বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ, শ্লেষ। আর বিজেপির নিদারুণ অস্বস্তি। অবশেষে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের মুখ বন্ধ করতে আসরে নামতে হল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। আগামী ২ মে তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সে দিনই তাঁকে মোদী ও অমিত শাহের মুখামুখি বসতে হবে। ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে না বসতেই বিপ্লব যে ভাবে কথার ফুলঝু়রি ছোটাতে শুরু করেছেন, তাতে নাকি প্রধানমন্ত্রী বেজায় অসন্তুষ্ট। তিনি চাইছেন, কথা কম। কাজ বেশি।
শোনা যাচ্ছে, বিপ্লবকে নিয়ে নাকি ত্রিপুরায় বিজেপি শিবিরেও ক্ষোভ দানা বাঁধছে। অবস্থা এখন এতটাই সঙ্গিন যে ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে বিজেপির সাফল্যের কারিগর সুনীল দেওধর পর্যন্ত ক্ষুব্ধ। তিনি নাকি ত্রিপুরার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চাইছেন।
কিন্তু এর পরেও বিপ্লব মুখর। তিনি বলেছেন, ‘‘সিভিল ইঞ্জিনিয়রদেরই সিভিল সার্ভিসে যাওয়া উচিত। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়রদের নয়।’’ কেন? বিপ্লবের মতে, সিভিল ইঞ্জিনিয়রদের যেহেতু গঠন সংক্রান্ত জ্ঞান থাকে, এবং সমাজকে গঠন করাই সিভিল সার্ভিস, তাই সিভিল ইঞ্জিনিয়রদেরই উচিত সিভিল সার্ভিসে যাওয়া।কখনও আবার চাকরিপ্রার্থীদের পরামর্শ দেওয়ার সুরে তাঁর বক্তব্য, ‘‘চাকরির বদলে গরুর দুধ বিক্রি করুন। ১০ বছরের মধ্যে ১০ লক্ষ টাকার মালিক হয়ে যাবেন।’’ এর আগেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘মহাভারতের যুগেও ইন্টারনেট ছিল। সেজন্য কুরুক্ষেত্র থেকে দূরে থেকেও ধৃতরাষ্ট্রকে যুদ্ধের ধারাবিবরণী শোনাতে পেরেছিলেন সঞ্জয়।’’ নারী সোন্দর্য নিয়েও তিনি ‘অকপট’। বিপ্লবের দাবি, ডায়না হেডেন এমন কিছু সুন্দরী নন যে তাঁকে বিশ্বসুন্দরী করতে হবে!
ত্রিপুরার বিজেপির একাংশ বলছে, বিপ্লব যেভাবে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে চলে্ছেন, তার প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও। নতুন করে জমি তৈরির সুযোগ পাচ্ছে সিপিএম। তবে প্রধানমন্ত্রী তলব করলেও এখনই বিপ্লবকে সরানোর সম্ভাবনা নেই বলেই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। মনে করা হচ্ছে, তাঁকে আপাতত সতর্ক করেই ছেড়ে দেওয়া হবে।