শীর্ষাসনে নেহরু। —ফাইল চিত্র।
সব আসনের মধ্যে শীর্ষাসনই সবথেকে বেশি পছন্দ করতেন জওহরলাল নেহরু। নিজেই লিখে গিয়েছেন সে কথা।
ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারীর কাছে নিয়মিত যোগাভ্যাস করতেন ইন্দিরা গাঁধী। সম্প্রতি যোগগুরু রামদেবও জানিয়েছেন, সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধী নিয়মিত যোগাসন করেন।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যোগাসনের মাধ্যমে শরীর চর্চা আজকের নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যোগের প্রচারকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন, যেন যোগাসন তাঁরই ‘ব্যক্তিগত সম্পত্তি’। আর এই যোগের সঙ্গেই হিন্দুত্বের মোড়কও দিচ্ছেন তিনি। কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দল তো বটেই, অনেক যোগশিক্ষকেরও তেমনটাই মনে হচ্ছে।
দিল্লিতে কুড়ি বছর ধরে যোগ শেখাচ্ছেন আর পি সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘যোগাভ্যাস একটি ব্যক্তিগত বিষয়। আবহমান ধরে এটি চলে আসছে। কিন্তু গত চার বছর ধরে যে ভাবে এটিকে ধার্মিক রং দিয়ে মাতামাতি করা হচ্ছে, সেটি আগে কখনও দেখিনি।’’ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন আজ বললেন, ‘‘যোগাসনের সঙ্গে ধর্ম বা জাতের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
কংগ্রেস আজ সকালেই আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এর সঙ্গেই নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর যোগাভ্যাসের ছবিও সামনে এনেছে নতুন করে। কংগ্রেস জমানায় যোগ নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছিল, সেই ছবিও সামনে এসেছে। কংগ্রেসের অনেক নেতা বাড়িতে একাধিক আসনের ভিডিও প্রকাশ করে জানান, ‘‘যোগ আর ব্যায়াম একদিনের নয়। এটি সাধনা, কোনও নাটকের বিষয় নয়।’’
এআইসিসি দফতরে কংগ্রেসের প্রমোদ তিওয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘‘তিরিশ বছর ধরে আমি যোগাভ্যাস করছি, কোনও দিন মনে হয়নি এ ভাবে ঢাক পেটাই। আসলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সেই পাথরটি পাইনি বলে।’’ ক’দিন আগেই ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ‘ফিটনেস’ চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে পাথরের উপর নানান ভঙ্গিতে শরীরচর্চার ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন মোদী। প্রমোদের ইঙ্গিত সে দিকেই। বিজেপি নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেই আজ গোটা বিশ্ব যোগ-সূত্রে বাঁধছে। তাঁর জন্যই যোগ নিয়ে এত সচেতনতা বাড়ছে, আলোচনা হচ্ছে। জবাবে কংগ্রেসের খোঁচা, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যোগের মাধ্যমে সুস্থ থাকার দাওয়াই দিচ্ছেন, দেশের রোগ সারান আগে!’’