হিন্দুত্বেরই রথ টানছে তাঁদের উন্নয়ন যজ্ঞ

চৈত্রে নবরাত্রির উপবাস করছেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী তবু হাতে-কলমে প্রমাণ করে দেখাচ্ছেন, এতে উন্নয়নের কাজে ঘাটতি হচ্ছে না এতটুকু। বিরোধী ও সমালোচকেরা বলছেন, মোদীর মুখেই উন্নয়ন। পিছনে হিন্দুত্বের রাজনীতিরই রথ ছোটাচ্ছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী: শনিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

চৈত্রে নবরাত্রির উপবাস করছেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী তবু হাতে-কলমে প্রমাণ করে দেখাচ্ছেন, এতে উন্নয়নের কাজে ঘাটতি হচ্ছে না এতটুকু। বিরোধী ও সমালোচকেরা বলছেন, মোদীর মুখেই উন্নয়ন। পিছনে হিন্দুত্বের রাজনীতিরই রথ ছোটাচ্ছেন তিনি।

Advertisement

প্রতি বছরই রামনবমীর আগে চৈত্র মাসে এবং দশেরার আগে নবরাত্রির উপবাস করেন নরেন্দ্র মোদী। বছরে দু’বার, এই ন’দিনে ফলমূল আর শরবত ছাড়া কিছুই মুখে তোলেন না। গোঁফ-দাড়ি ছাঁটেন না। কিন্তু তাতে তাঁর কাজে কমতি নেই। শনিবার যেমন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন মোদী। তার পর রাতে হ্যাকাথন-এর অংশগ্রহণকারীদের জন্য বক্তৃতা। রবিবারেও তাঁর ছুটি নেই। প্রথমে যাবেন ইলাহাবাদে, হাইকোর্টের সার্ধ-শতবার্ষিকী উপলক্ষে। তার পর জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যে তৈরি চেনানি-নুসরি সুড়ঙ্গপথের উদ্বোধন করবেন তিনি। জনসভাও করবেন উধমপুরে।

মোদীর বার্তা স্পষ্ট, তিনি উন্নয়নেই রয়েছেন। বিরোধীরা বলছেন, মোদী যতই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ দেখাতে চান, আসলে নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে ধর্মীয় মেরুকরণের কাজ চলছে সমানে। উদাহরণ? গুজরাত। কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, নভেম্বর-ডিসেম্বরে গুজরাতে ভোট। সেই দিকে তাকিয়েই গোহত্যার শাস্তি বাড়িয়ে যাবজ্জীবন করেছে গুজরাত সরকার। গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী ঘোষণা করেছেন, তিনি গোটা রাজ্যটাকে নিরামিষাশী করতে চান। ছত্তীসগঢ়ে মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ হুঙ্কার ছেড়েছেন, গোহত্যার অপরাধীদের তিনি ফাঁসিতে ঝোলাতে চান।

Advertisement

আরও পড়ুন: ছেলেকে বিঁধে সরব মুলায়ম

কংগ্রেস নেতা মনীশ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘বিজেপি যে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের দিকে চোখ রেখে পুরোপুরি মেরুকরণের রাজনীতি করবে, তা যোগী আদিত্যনাথকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী করার দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যোগী এসে বেআইনি কসাইখানা বন্ধ করার নামে গোটা রাজ্যেই মাছ-মাংস-ডিম বন্ধ করে দিয়েছেন।’’ সমালোচকরা বলছেন, পুরোপুরি হিন্দুত্বের মোড়ক মুখ্যমন্ত্রী যোগীর কাজকর্মেও। অখিলেশ যাদবের ছেড়ে যাওয়া কালিদাস মার্গের ৫ নম্বর বাংলো তিনি শুদ্ধ করিয়েছেন। মন্ত্র পড়ে, গঙ্গাজল ও গরুর দুধ ছিটিয়ে, যাবতীয় চামড়ার জিনিস ফেলে দিয়ে তবে ওই বাংলোয় পা রেখেছেন যোগী। তাঁর পোষা গরুর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনেই তৈরি হয়েছে গোশালা।

সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য হিসেবে বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য হল, সংবিধান সংশোধন করে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করা। মোদী সরকার তথা বিজেপি সেই ভাবেই যাবতীয় রণকৌশল তৈরি করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন