ছবি: এএফপি।
মন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে দিনভর টানাপড়েন চলেছে দিল্লিতে। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, নরেন্দ্র মোদী সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান। অন্তত চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক তথা মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিতে যত কম সম্ভব বদল চান তিনি।
গত কাল রাতে পাঁচ ঘণ্টা, আজ দুপুরে তিন ঘণ্টা। মন্ত্রিসভার তালিকা নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। দুপুরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অরুণ জেটলি জানিয়ে দিয়েছেন, অসুস্থতার জন্য আর কোনও দায়িত্ব নিতে চান না। কিন্তু সন্ধেয় তাঁর বাড়িতে যান মোদী। সূত্রের খবর, জেটলিকে অর্থ মন্ত্রক অথবা দফতরহীন মন্ত্রী নিদেনপক্ষে ক্যাবিনেট মর্যাদার পদ দিতে আগ্রহী মোদী। এ নিয়ে জেটলিকেই আজ রাতের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রকে খোদ অমিতের নাম ঘিরেও অনেক দিন ধরে জোর আলোচনা চলছে রাজধানীতে। আবার বিজেপিরই একটি অংশ বলছে, এখনও বিজেপি সভাপতি পদে অমিত শাহের উত্তরসূরি নিয়ে জট কাটেনি। সঙ্ঘেরও অনেকের মত, সভাপতি পদে থেকে অমিত শাহ সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে যে আক্রমণাত্মক যাত্রা শুরু করেছেন, মন্ত্রিসভায় চলে গেলে তা থেমে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির বিধানসভা ভোট সামলে পরে তাঁকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। অমিত নিজেও এখন মন্ত্রিসভায় যেতে আগ্রহী নন।
অমিত শাহ যদি মন্ত্রী না হন ও জেটলি যদি রাজি না হন তবে অর্থমন্ত্রী কে হবেন? আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অমিতের বৈঠকের পরেই পীযূষ গয়ালকে ডেকে পাঠান বিজেপি সভাপতি। বিজেপি সূত্রের দাবি, এই সরকার তার আগের সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। ফলে অন্তত প্রধান চারটি মন্ত্রকে বিশেষ বদলের পক্ষপাতী নন প্রধানমন্ত্রী। আজই জেটলির বাড়িতে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সেনার একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এঁরা সকলেই মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সদস্য। সূত্রের খবর, যেমন ওই কমিটিতে বড় বদল চান না মোদী তেমনই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়েও বড় মাপের পরিবর্তন চান না তিনি। এ দিনই অমিত শাহের বাড়িতে মোদী জমানার দুই গুরুত্বপূর্ণ আমলা নৃপেন্দ্র মিশ্র ও পি কে মিশ্র দীর্ঘ বৈঠক করেন। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে ডেকে পাঠান। তাঁকেও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে ফের নিয়োগ করা হতে পারে।
বিদায়ী সরকারের মাঝপথে ধর্মেন্দ্র প্রধান, প্রকাশ জাভড়েকরের মতো যে মন্ত্রীদের গুরুত্ব বেড়েছে তাঁদের গুরুত্ব আরও বাড়তে পারে। এঁরা সকলেই টিম অমিত শাহের সদস্য। রাহুল গাঁধীকে হারানোর পরে স্মৃতি ইরানিও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক পেতে পারেন। এর উপরে শরিকদেরও মন্ত্রী করা হবে। বিজেপি সূত্রের মতে, আপাতত যে সূত্র মেনে চলা হচ্ছে, তা হল প্রতি সাত জন সাংসদ পিছু একটি ক্যাবিনেট মন্ত্রক। সূত্রের খবর, নীতীশ কুমার আজ অমিত শাহের বাড়ি যান। রেল মন্ত্রক চেয়েছেন। তাঁর দল সাংসদ সংখ্যার বিচারে ১টি ক্যাবিনেট ও ১টি স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর পদ পেতে পারে। জেডিইউ সূত্রে খবর, তাদের তরফে লাল্লন সিংহ ও সন্তোষ কুশওয়াহার নাম দেওয়া হয়েছে। শিবসেনাকে ২টি, অকালি, আপনা দলের মতো দলকে একটি করে মন্ত্রিপদ দেওয়া হতে পারে। রামবিলাস পাসোয়ান ও আপনা দলের অনুপ্রিয়া পটেল ফের মন্ত্রী হতে পারেন।