শনিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কেরলে বর্ষা প্রবেশ করল। ছবি: পিটিআই।
কেরলে বর্ষা প্রবেশ করল শনিবার, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আট দিন আগেই। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ১৬ বছরে এত তাড়াতাড়ি দেশে বর্ষার আগমন হয়নি। পশ্চিমবঙ্গেও এ বছর সময়ের আগে বর্ষা প্রবেশ করতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর তেমন ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। যদিও বাংলায় বর্ষা প্রবেশের বিষয়ে নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলা হয়নি।
দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের আনুষ্ঠানিক সময় ১০ জুন। উত্তরবঙ্গে অবশ্য আরও আগে বর্ষা ঢুকে পড়ে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। দিন দুয়েকের মধ্যেই উত্তরে প্রবেশ করতে পারে বর্ষার বাতাস। পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গেও জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বর্ষা প্রবেশ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দক্ষিণবঙ্গ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও পূর্বাভাস নেই।
আপাতত বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপের অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে মধ্য ও উত্তর বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থলে নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা। তার জেরে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে একাধিক জেলায়। ভিজতে পারে কলকাতাও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা এইচ আর বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেরলে আগাম বর্ষা প্রবেশ করলে বাংলার ক্ষেত্রেও তা হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। আপাতত বঙ্গোপসাগরের উপরে নিম্নচাপের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে দিকে আমরা নজর রেখেছি। নিম্নচাপের প্রভাব কাটলে চিত্র আরও পরিষ্কার হবে।’’
কেরলে বর্ষা প্রবেশের খবরের সঙ্গে গত ১৬ বছরের পরিসংখ্যানও প্রকাশ করেছে মৌসম ভবন। সাধারণত কেরলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে ১ জুন। সেটাই দেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ষার আগমনের সময়। এ বছর তার চেয়ে আট দিন আগে বর্ষা প্রবেশ করল। শেষ বার এত আগে কেরলে বর্ষা ঢুকেছিল ২০০৯ সালে। তা ১৬ বছর আগের কথা।
২০২৪ সালেও স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য আগে কেরলে বর্ষা ঢুকেছিল। সে বার ৩০ মে কেরলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশের কথা জানিয়েছিল মৌসম ভবন। এ ছাড়া, ২০০৯ সালে কেরলে বর্ষা প্রবেশ করেছিল ২৩ মে, এ বছরের চেয়ে এক দিন আগে।
মৌসম ভবনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে বর্ষা প্রবেশের তারিখ যথাক্রমে ৩১ মে, ২৯ মে, ৫ জুন, ১ জুন, ৬ জুন, ৫ জুন, ৮ জুন, ৩০ মে, ২৯ মে, ৮ জুন, ১ জুন, ৩ জুন, ২৯ মে এবং ৮ জুন।
কেরলে বর্ষার সবচেয়ে তাড়াতাড়ি প্রবেশের নজির তৈরি হয়েছিল ১৯১৮ সালে। সে বছর ১১ মে আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ষা ঢুকে পড়েছিল কেরলে। এ ছাড়া, এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে দেরি করে কেরলে বর্ষা প্রবেশের নজির রয়েছে ১৯৭২ সালে। সে বছর বর্ষা এসেছিল ১৮ জুন।
শনিবার কেরল, কর্নাটকের দক্ষিণ অংশ এবং গোয়ার কিছু অংশে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২৯ মে পর্যন্ত কেরল এবং কর্নাটকের উপকূলে বর্ষণ চলবে। সঙ্গে থাকতে পারে ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টি হবে তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশেও।