প্রতীকী ছবি।
সচেতনতা বাড়লে ক্যানসারের মতো মারণরোগ প্রতিরোধ সম্ভব— ত্রিপুরায় এক বৈঠকে এমনই আশাপ্রকাশ করলেন দেশ-বিদেশের ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা।
‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্সেস’-এর ক্যানসার বিশেষজ্ঞ জি কে রথ জানান, ৬৫ শতাংশ ক্যানসার প্রতিরোধযোগ্য। প্রাথমিক পর্য়ায়ে ধরা পড়লে ৮০ শতাংশ ক্যানসার সারানো যায়। আমেরিকার সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথের প্রধান টেড ট্রিম্বলও জানান, মানুষের সচেতনতাও ক্যানসারের অন্যতম ওষুধ।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ক্যানসার রুখতে প্রথমেই কী কী জিনিস বা অভ্যাস বর্জন করা উচিত তা জানা দরকার। তামাক ও মদ ছাড়ার কথা বলেন তাঁরা। আরও জানান, সুপুরি, খৈনি, পান থেকেও ইসোফেগাস বা গ্যাসট্রিক ক্যানসার হতে পারে। ওই তালিকায় রয়েছে পিৎজা, বার্গার, স্মোকড মিট বা তন্দুর জাতীয় খাদ্যও। ক্যানসার প্রতিরোধে ফাইবার মিশ্রিত খাবার, টাটকা সবজি ও ফল বেশি করে খেতে বলেন ইনস্টিটিউট অফ সাইটোজি অ্যান্ড প্রিভেনটিভ অনকোলজির প্রধান রভি মেহরত্রা।
বিশেষজ্ঞরা জানান, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলীর পরিবর্তন কারও দেহে ক্যানসার-হানার আশঙ্কা কমিয়ে দিতে পারে। কায়িক পরিশ্রমের গুরুত্বের কথাও তোলেন তাঁরা। জানিয়ে দেন, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি আগরতলায় আন্তর্জাতিক ক্যান্সার স্ক্রিনিং নেটওয়ার্ক-এর (আইসিএসএল) তিন দিনের বৈঠক হয়ে। তাতে সামিল ছিলেন আমেরিকা, ইতালি, জার্মানি, সুইৎজারল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা। ছিলেন দিল্লি ও দেশের অন্য প্রান্তের চিকিৎসকরাও।
বৈঠকের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের’ বিশেষজ্ঞ সুধা শিবরাম জানান, সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মহিলাদের সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের মাত্রা কমছে। কিন্তু বাড়ছে ব্রেস্ট ক্যানসার। অনেকেই দেহে ক্যানসারের লক্ষ্মণ প্রথমে টের পান না। রোগ ধরা পড়ে দেহে অনেকটা ছড়ানোর পরই।
কী কী সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত? ফ্রান্সের আইএআরসি-র ক্যানসার বিশেষজ্ঞ শঙ্কর নারায়ণনের বক্তব্য, দেহের কোনও অংশে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হলে, কোনও অংশ ফুলে উঠলে, বুকে মাঝেমধ্যেই শ্লেষ্মা জমলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা জানান— ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে প্রধানত মুখ, পাকস্থলী এবং ফুসফুসে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।