কেন্দ্রীয় পোর্টালে ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্ত করার সময়সীমা শেষ হয়েছে। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
৫.১৭ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি কেন্দ্রের ‘উমিদ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে দু’লক্ষের বেশি সম্পত্তিতে অনুমোদনও মিলেছে। পরিসংখ্যান প্রকাশ করে এই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক। এ ছাড়া, বেশ কিছু আবেদন তথ্য যাচাইয়ের পর বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ওয়াকফ সম্পত্তি কেন্দ্রের পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাঞ্ছনীয়। এর জন্য গত ৬ জুন ‘উমিদ’ নামে স্বতন্ত্র পোর্টাল খোলে সরকার। ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণের জন্য ছ’মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। ৬ ডিসেম্বর ছিল এর শেষ দিন। মন্ত্রী কিরেন রিজিজু গত সপ্তাহেই তা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, এই সময়সীমা আর বৃদ্ধি করা যাবে না। তার পর সোমবার ওয়াকফ পোর্টালের তথ্য ও পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হল।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রক জানিয়েছে, ৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৪০টি ওয়াকফ সম্পত্তি পোর্টালে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৯০৫টি সম্পত্তিতে অনুমোদন মিলেছে। সবচেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্ত হয়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে (৯২,৮৩০ থেকে ৮৬,৩৪৫ সুন্নি এবং ৬৪৮৫ শিয়া)। এ ছাড়া, মহারাষ্ট্র থেকে ৬২,৯৩৯টি, কর্নাটক থেকে ৫৮,৩২৮টি এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে ২৩,০৮৬টি ওয়াকফ সম্পত্তি কেন্দ্রের পোর্টালে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ওয়াকফ সংক্রান্ত ২ লক্ষ ১৩ হাজার ৯৪১টি সম্পত্তি এখনও অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তথ্য যাচাইয়ের সময় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ৮৬৯টি আবেদন।
কেন্দ্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়াকফ কর্মসূচি সম্পন্ন করার জন্য অনবরত বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ চলেছে। কী ভাবে পোর্টালে এই সংক্রান্ত তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে, তা হাতেকলমে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং প্রশাসনিক দল দেশ জুড়ে সাতটি আঞ্চলিক বৈঠকেরও আয়োজন করে। চালু করা হয়েছিল বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর।
ওয়াকফ সংশোধনী বিলের পক্ষে লোকসভায় ২৮৮টি ভোট পড়েছিল। বিপক্ষে গিয়েছিল ২৩২টি ভোট। অন্য দিকে রাজ্যসভায় ১২৮ জন সাংসদ এই বিলের পক্ষে ভোট দেন এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯৫টি। সংসদের উভয় কক্ষে এই সংশোধিত বিল পাশ হওয়ার পরে গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতিক্রমে সেটি আইনে পরিণত হয়। পরে এই সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে যায়। আদালত জানায়, সংসদে পাশ হওয়া আইনকে অসাংবিধানিক বলা যায় না। তবে ওই আইনের দু’টি ধারা নিয়ে আপত্তি জানায় শীর্ষ আদালত। প্রথমত, সংশোধিত আইনে বলা হয়েছিল, কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ না কি সরকারি, তা জেলাশাসক বা সম পদমর্যাদার কোনও আধিকারিক ঠিক করতে পারেন। আদালত মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত জেলাশাসক নিতে পারেন না। এটা আদালতের কাজ। দ্বিতীয়ত, আইনে বলা হয়েছে, যিনি ওয়াকফে দান করবেন, তাঁকে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করার প্রমাণ দিতে হবে। কিন্তু এটি কার্যকর করার কোনও নিয়ম সরকার বানায়নি। ধারা দু’টি স্থগিত রাখা হয়েছে।