ভোটে কারচুপির অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে বারবার তুলেছে পশ্চিমী দুনিয়া। সরব হয়েছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা। আগামী বছর ফের ভোট তাঁর দেশে। কিন্তু তার আগে পুরনো অভিযোগ মুছে ভাবমূর্তি সংস্কারে মন দিচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। আর সেই কাজেই শরণাপন্ন হয়েছেন ‘পুরনো মিত্রের’। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতের সঙ্গে নির্বাচনী ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার একটি মেকানিজম তৈরি করে স্বচ্ছ নির্বাচনের বার্তা দিতে চাইছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা এগোচ্ছে মস্কোর।
আর তার অঙ্গ হিসেবেই ভারতের পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন চলাকালীন কিছুটা নিঃশব্দেই হাজির থাকলেন রাশিয়ার নির্বাচন কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান নিকোলাই লেভিচেভ। শুধু রইলেনই না, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু কেন্দ্রে গিয়ে হাতে-কলমে দেখলেন নির্বাচন প্রক্রিয়া। পৃথক বৈঠক করলেন ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী এবং বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। সূত্রের খবর, ভারতীয় নেতৃত্বকে লেভিচেভ জানিয়েছেন, বিশাল জনসংখ্যা এবং কঠিন পরিস্থিতি সামলেও যে ভাবে এ দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলে তা দেখে তিনি অভিভূত।
রাশিয়ায় ভোট হয় ব্যালট পেপারে। ভারতে ইলেকট্রনিক ভোটযন্ত্রের ব্যবহারে মুগ্ধ লেভিচেভ জানিয়েছেন, এটি রাশিয়াতেও ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করবেন। তবে ভোট গণনার প্রযুক্তিগত দিকটিতে ভারতের চেয়ে রাশিয়া অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রুশ কর্তার কথায়, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে গিয়ে পরস্পরের নৈপুণ্যের আদানপ্রদান করতে পারি আমরা।’’
১৯৯০ সাল থেকে স্টেট দুমা এবং ফেডারেল কাউন্সিল— এই দু’ভাগে ভাগ হয়ে সাধারণ নির্বাচন শুরু হয় রাশিয়ায়। এখনও পর্যন্ত ৭টি নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে ‘অর্গানাইজেশন অব সিকিওরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ’ (ওএসসিই)-সহ বহু সংস্থাই গত কয়েক বছর ধরে সে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব। অভিযোগ উঠেছে কারচুপির। ফলে রাশিয়ার পক্ষে ভাবমূর্তি সংস্কার জরুরি। অন্য দিকে, রাশিয়ার সঙ্গে গত কয়েক মাসে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হওয়ার পর ভারতও চাইছে সম্পর্কে পুরনো উত্তাপ ফিরিয়ে আনতে। তা যদি নির্বাচনের প্রযুক্তি আদানপ্রদানের মাধ্যমেও আসে, সেটাও স্বাগত নয়াদিল্লির কাছে।