ভোগান্তি: মঙ্গলবার ছিল জাতীয় ছুটি। বুধবার ধর্মঘট। তার জেরে সকাল থেকেই নাজেহাল হতে হল সাধারণ গ্রাহকদের। এটিএম কাউন্টারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক গ্রাহক এসে ঘুরে যান। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
আশঙ্কা ছিলই। যা সত্যি করে বুধবারের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটে দেশ জুড়ে বিপুল ধাক্কা খেল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। চেক ক্লিয়ারেন্স, টাকা জমা বা তোলা, কর জমা, বন্ড কেনাবেচা-সহ বিভিন্ন সরকারি আর্থিক লেনদেনের (ট্রেজারি) মতো কাজগুলো প্রায় বন্ধই ছিল। এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়েও বহু জায়গায় নাকাল হলেন গ্রাহক। বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ধর্মঘটের প্রভাব সব থেকে বেশি পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চল ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দেওয়ার যে পরিকল্পনা কেন্দ্র নিয়েছে, তার বিরুদ্ধ প্রতিবাদ জানাতেই এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্সের (ইউএফবিইউ) ছাতার তলায় থাকা অফিসার ও কর্মীদের ৯টি ইউনিয়ন।
ধর্মঘটী সংগঠনগুলির তরফে দাবি, এ দিন সারা দেশে প্রায় পুরোপুরি বন্ধ ছিল ব্যাঙ্কের কাজকর্ম। বিশেষ করে ব্যাহত হয়েছে এটিএম পরিষেবা। ইউএফবিইউর অন্তর্গত এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগরের দাবি, ‘‘এটিএম নিরাপত্তারক্ষীদের ইউনিয়ন ধর্মঘটে সামিল হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৯০% এটিএমেরই ঝাঁপ খোলেনি।’’ অফিসারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের (আইবক) সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত-ও বলেন, ‘‘ধর্মঘট সর্বাত্মক হয়েছে।’’ রাজেনবাবুর দাবি, দেশে আটকে গিয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ চেক ক্লিয়ারিং।
এই নিয়ে গত ছ’দিনের মধ্যে দু’দিন ব্যাঙ্ক ধর্মঘট হল দেশে। এর আগে শুক্রবার তা ডেকেছিল শুধু আইবক।
সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অব বরোদা, বিজয়া ব্যাঙ্ক এবং দেনা ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সংযুক্তির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। ইউনিয়নের নেতারা জানান, বুধবারের ধর্মঘট ডাকা হয় প্রধানত ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতেই। কারণ তাঁদের আশঙ্কা, সংযুক্তি হলে ব্যাঙ্ক তিনটির মোট ৯,০০০ শাখার মধ্যে কমপক্ষে ১,০০০টি বন্ধ করা হতে পারে। যে ভাবে স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে তার সহযোগী পাঁচ ব্যাঙ্ক ও ভারতীয় মহিলা ব্যাঙ্ককে মেশানোর পরে সব মিলিয়ে মোট ৬,৯৫০টি শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলির বক্তব্য, এত শাখা বন্ধ করলে পরিষেবা তো ব্যাহত হবেই। পাশাপাশি কাজ হারাতে পারেন বহু কর্মী। কারণ, স্টেট ব্যাঙ্কের সংযুক্তির পরেও কর্মী ছাঁটতে চালু করা হয়েছিল স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প।